চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা। তারা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ডাকসু নির্বাচনের জন্য অতিরিক্ত সময় চায়, সে জন্য যৌক্তিক কারণ দর্শাতে হবে। একই সঙ্গে ডাকসুতে উপাচার্যের ক্ষমতা হ্রাস, নতুন দুই পদ সৃষ্টি, পুরোনো একাধিক পদ একীভূতকরণসহ সংগঠনের গঠনতন্ত্র সংস্কারে ৯ দফা প্রস্তাবনাও দিয়েছে শিবির। সোমবার ক্যাম্পাসের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিবির নেতারা এসব দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন শিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ। ৯ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান। প্রস্তাবনায় বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপাচার্য পদাধিকারবলে ডাকসুর সভাপতি মনোনীত হন। তাঁর তত্ত্বাবধানে সব সভা, নির্বাহী কমিটি, অন্যান্য কমিটি ও উপকমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি সংসদ পরিচালনা, জরুরি অবস্থা, অচলাবস্থা বা নিয়ম ভঙ্গের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। যে কোনো সময় যে কোনো কমিটির সদস্যকে বহিষ্কার বা সম্পূর্ণ কমিটি বাতিল বা নতুন নির্বাচন আহ্বানসহ একাধিক ক্ষমতা তাঁকে দেওয়া হয়েছে। সভাপতির এসব ক্ষমতা হ্রাস করে পদটিকে কেবল আলঙ্করিক করার প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি। যেখানে সভাপতির কোনো ধরনের নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না।

কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদকে আলাদা করে ‘পাঠাগার, পাঠকক্ষ ও কমনরুমবিষয়ক সম্পাদক’ এবং ‘ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিনবিষয়ক সম্পাদক’ পদ তৈরির প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি। ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক’ পদ পরিবর্তন করে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক’ পদ চালুর প্রস্তাব করেছে তারা। ‘সাহিত্য সম্পাদক’ ও ‘সংস্কৃতি সম্পাদক’ পদকে একীভূত করে ‘সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক’ পদ তৈরিরও প্রস্তাব করা হয়েছে। 

অন্যদিকে, ‘নারী ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক’ এবং ‘ধর্ম ও সম্প্রীতিবিষয়ক সম্পাদক’ নামে নতুন পদ তৈরির প্রস্তাব করেছে ছাত্রশিবির। ডাকসুর মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়। আগে ডাকসুর কমিটির মেয়াদ শেষ হলে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ৯০ দিন মেয়াদ থাকত।

সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ বলেন, সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে যৌক্তিক সংস্কারগুলো নিশ্চিত করে জানুয়ারির মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন চায়। আমরাও চাই। তবে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করতে প্রশাসন যদি অতিরিক্ত সময় চায়, যৌক্তিক কারণ দেখাতে হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত

ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।

সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।

আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।

সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জিএম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
  • দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের থেকে তরুণদের দূরে থাকতে হবে: মজিবুর রহমান
  • শিশু নাঈমের পাশে ইবি ক্রিকেট ক্লাব
  • ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত