গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুর বাজারে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিকাশ এজেন্টের ৬ লাখ টাকা ছিনতাই করে পালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ওই ব্যবসায়ীকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন পাশের মুদি দোকানদার। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে।

ভুক্তভোগী বিকাশ ব্যবসায়ী হলেন ফারুক হোসেন। আহত মুদি দোকানির নাম শিমুল হোসেন। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীরা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সফিপুর বাজারের যমুনা রোডের সামনে হঠাৎই বিকট শব্দ হয়। পরপর কয়েকটি ককটেল ফাটলে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে কেউ কিছু বুঝতে না পারলেও সামনে গিয়ে দেখা যায় বিকাশ ব্যবসায়ীর টাকা নিতেই ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। বিকাশ ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন সারা দিন ব্যবসা বাণিজ্য শেষে টাকা নিয়ে দোকান হতে বের হতেই দুটি প্রাইভেটকার থেকে তাকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুঁড়ে দুর্বৃত্তরা।

এ সময় ভয়ে তার হাত থেকে টাকার থলে পড়ে যায়। এটি দেখে পাশের দোকানদার শিমুল হোসেন দৌড়ে আসলে তাকে উদ্দেশ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে শিমুল গুরুতর আহত হন। তবে আশপাশের লোকজন জড়ো হওয়ার আগেই দুর্বৃত্তরা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।

ব্যবসায়ী ফারুক হোসাইন বলেন, দোকান বন্ধ করে টাকার ব্যাগটা মাত্র হাতে নিয়েছি এমন সময় প্রাইভেটকার থেকে ৫-৭ জন লোক নেমে আমার দোকান লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর আমার ব্যাগে থাকা ৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। 

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ জানান, গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা বিকাশের দোকানদার থেকে কিছু টাকা লুট করেছে। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ