২০৩৪ পর্যন্ত ম্যানসিটিতেই থাকছেন হল্যান্ড
Published: 17th, January 2025 GMT
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের গোলমেশিন আর্লিং হল্যান্ড ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে নতুন করে এক দশকের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। নরওয়ের এই তারকা ২০৩৪ সাল পর্যন্ত থাকবেন ইতিহাদ স্টেডিয়ামে। ২০২২ সালে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে সিটিজেনদের দলে যোগ দেওয়া হল্যান্ড ইতিমধ্যে দলের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছেন।
প্রথমে ২০২২ সালের মে মাসে ৫ বছরের চুক্তিতে ম্যানসিটিতে আসেন তিনি। আড়াই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১১১ গোল করে প্রমাণ করেছেন নিজের দক্ষতা। তার অসাধারণ পারফরম্যান্সেই ম্যানসিটি জিতেছে টানা লিগ শিরোপা এবং ক্লাবের প্রথম উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ ঐতিহাসিক ট্রেবল।
নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের পর হল্যান্ড বলেন, ‘ম্যানসিটির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই ক্লাবের অংশ হয়ে আরও অনেক সময় কাটানোর অপেক্ষায় আছি। পেপ গার্দিওলা, কোচিং স্টাফ, আমার সতীর্থ এবং ক্লাবের সবাইকে ধন্যবাদ, যারা আমাকে দারুণভাবে সমর্থন করেছেন। তারা ম্যানসিটিকে এমন একটি বিশেষ জায়গা বানিয়েছেন, যেখানে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি। এখন আমি পুরোপুরি সিটির, যাই ঘটুক না কেনো।’
২০২২-২৩ মৌসুমে ম্যানসিটির হয়ে মাত্র ৩৬ ম্যাচে রেকর্ড ৩৫ গোল করেন হল্যান্ড । পুরো মৌসুমে তার গোল সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২, যা প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ে মুখ্য ভূমিকা রাখে।
হল্যান্ডের নতুন চুক্তি নিয়ে ম্যানসিটির ডিরেক্টর বলেছেন, ‘ক্লাবের সবাই অত্যন্ত আনন্দিত যে হালান্ড এতদিনের জন্য আমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এটি তার প্রতি আমাদের গভীর আস্থা এবং ক্লাবের প্রতি তার ভালোবাসার প্রতিফলন। আমরা নিশ্চিত, তিনি ভবিষ্যতেও অসাধারণ কিছু করে দেখাবেন।’
হল্যান্ডের নতুন চুক্তিটি ক্রীড়া জগতে অন্যতম লাভজনক চুক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ২৪ বছর বয়সী হল্যান্ড তার আগের চুক্তি অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে পৌনে চার লাখ পাউন্ড বেতন পেতেন। তবে একাধিক বড় ধরনের প্রায় নিশ্চিত বোনাসের কারণে তার সাপ্তাহিক আয় সাড়ে আট লাখ পাউন্ডের বেশি পরিমাণে পৌঁছে যায়।
পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী ২০২৭ সালের গ্রীষ্ম পর্যন্ত সিটিতে থাকার কথা ছিল হল্যান্ডের। নতুন এই চুক্তি যখন শেষ হবে নরওয়েজিয়ান এই ফরোয়ার্ডের বয়স হবে ৩৪ বছর। তবে বেশ কিছু দিন থেকেই গুঞ্জন ছিল তার প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিল বর্তমান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হল য ন ড
এছাড়াও পড়ুন:
ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে
দেশে রোগমুক্ত সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তুলতে ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ড্রামে খোলা ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ একটি বড় বাধা। একইসাথে ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধকরণ ও গুণগত প্যাকেজিং অত্যন্ত জরুরি।
রাজধানীর বিআইপি কনফারেন্স রুমে সোমবার (২৮ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত “সবার জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়” শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব বিষয় তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এই কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৬ জন সাংবাদিক অংশ নেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, জাতীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট জরিপ ২০১১-১২ অনুযায়ী, প্রাক্-বিদ্যালয়গামী প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন ভিটামিন ‘এ’ এবং দুইজন শিশু ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগছে। ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ ব্যতীত ভোজ্যতেল বাজারজাত করা নিষিদ্ধ। আইসিডিডিআর,বি-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারে মোট ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশই ড্রামে বিক্রি হয়। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ তেলে কোনো ভিটামিন ‘এ’ নেই, আর ৩৪ শতাংশ তেলে রয়েছে প্রয়োজনের চেয়ে কম মাত্রায়। মাত্র ৭ শতাংশ ড্রামের খোলা তেলে আইন অনুসারে ভিটামিন ‘এ’–এর নির্ধারিত পরিমাণ পাওয়া গেছে। ফলে সাধারণ মানুষ আইনটির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
কর্মশালায় জানানো হয়, নন-ফুড গ্রেড উপকরণে তৈরি ড্রাম দিয়ে ভোজ্যতেল পরিবহন করা হয়-যেগুলো আগে কেমিক্যাল, লুব্রিকেন্ট/মবিল বা অন্যান্য শিল্পপণ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে। এ ধরনের ড্রামে সংরক্ষিত খোলা ভোজ্যতেল জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, পাশাপাশি এতে ভেজাল মেশানোর আশঙ্কাও থাকে। এই পুরোনো ড্রামগুলোতে কোনো লেবেল বা উৎস সম্পর্কিত তথ্য না থাকায় তেলের উৎপত্তিস্থল বা সরবরাহকারীকে শনাক্ত করা যায় না। তাই খোলা ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ আইন বাস্তবায়নে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কর্মশালায় জানানো হয়, জুলাই ২০২২ এর পর থেকে ড্রামে খোলা সয়াবিন তেল এবং ডিসেম্বর ২০২২ এর পর থেকে খোলা পাম তেল বাজারজাতকরণ বন্ধে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। তাই নিরাপদ ভোজ্যতেল ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসটিআই, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।
ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি অন্ধত্ব, গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যুসহ নানা শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, ভিটামিন ‘ডি’-এর অভাব রিকেটস ও হাড় ক্ষয়ের পাশাপাশি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ প্রেক্ষাপটে, ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’ সমৃদ্ধকরণ একটি সাশ্রয়ী ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এতে সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের খাবারের মাধ্যমে সহজেই এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন পেতে পারে।
এছাড়াও কর্মশালায় ভোজ্যতেলে গুণগতমানের প্যাকেজিং নিশ্চিতের উপরও জোর দেওয়া হয়। সাধারণত সূর্যরশ্মিসহ যেকোন আলোর সংস্পর্শে ভিটামিন ‘এ’ নষ্ট হতে থাকে এবং একপর্যায়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। ভোজ্যতেল বাজারজাত হয় যেসব বোতলে সেগুলোর অধিকাংশই আলো প্রতিরোধী না হওয়ায় ভোজ্যতেলের গুণগত ও পুষ্টিমান হ্রাস পায়। সে কারণে ভোজ্যতেলের প্যাকেজিংয়ের জন্য আলো প্রতিরোধী অস্বচ্ছ উপাদান ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর-এর কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগের পরিচালক (উপসচিব) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন; ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের কনসালটেন্ট সাবেক অতিরিক্ত সচিব মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার; ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট আবু আহমেদ শামীম; দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
কর্মশালায় গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের লার্জ স্কেল ফুড ফর্টিফিকেশন কান্ট্রি এডভোকেসি বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. রীনা রাণী পাল এবং প্রজ্ঞা'র কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার।
ঢাকা/হাসান/সাইফ