মাদকাসক্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য খুলনায় রয়েছে বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। আড়াই বছর ধরে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানে কোনো চিকিৎসক নেই। এ কারণে বন্ধ রোগী ভর্তি। রোগী না থাকায় তেমন কাজ নেই ১৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর। তারা নিয়মিত অফিসে যান না। প্রতিষ্ঠানটির জন্য বছরে সরকারের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৭০ লাখ টাকা; যার পুরোটাই গচ্চা।
খুলনা নগরীর গল্লামারী এলাকায় একটি ভবনের তৃতীয় ও পঞ্চম তলা ভাড়া নিয়ে চলছে বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। সেখানে শয্যা রয়েছে ২৫টি। শুরু থেকে এই প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকের পদ মাত্র একটি।

জানা গেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে চিকিৎসক বদলি হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যান। তখন থেকে পদটি শূন্য। এর ফলে রোগী ভর্তি করা হয় না আড়াই বছর। নিরাময় কেন্দ্রের ৪১টি পদের মধ্যে ২৮টি শূন্য। কর্মরত ১৪ জন। মঞ্জুরীকৃত পদের মধ্যে নিরাপত্তা প্রহরীর পদ নেই। প্রধান কার্যালয় থেকে একজনকে ডেপুটেশনে এখানে পাঠানো হয়েছে। রোগী ভর্তি বন্ধ থাকায় কর্মরত ১৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তেমন কোনো কাজ নেই। এ অবস্থায় তারা সবাই ঠিকমতো অফিসেও যান না। কেন্দ্রটিতে ল্যাব ও গাড়ি না থাকলেও রয়েছে ল্যাব সহকারী ও চালক। বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন খাতে নিরাময় কেন্দ্রের জন্য বছরে সরকারের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৭০ লাখ টাকা। কিন্তু মাদকাসক্তদের চিকিৎসা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্রটি কোনো কাজে আসছে না।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, নিরাময় কেন্দ্রের তিন-চারটি কক্ষে ২৫টি শয্যা পড়ে রয়েছে। সেগুলোর ওপর ধুলার আস্তর জমেছে। বেশির ভাগ কক্ষেই কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই।
কেন্দ্রের কাউন্সেলর রহিমা খাতুন বলেন, এটি সচল থাকলে মাদকাসক্তরা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ পেত। কিন্তু এখন তাদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হচ্ছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে একজন মাদকাসক্তের চিকিৎসায় ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হচ্ছে।
তিনি বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত অফিস করেন না, এ অভিযোগ সঠিক নয়। সবাই অফিসে আসেন; কিন্তু রোগী না থাকায় কাজ কম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মচারী বলেন, কোনো অভিভাবক মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে এখানে ভর্তির জন্য আনলে মোবাইল ফোনের নম্বর রেখে দেওয়া হয়। তাদের বলা হয়, চিকিৎসক যোগদান করলে ফোন দেওয়া হবে। কিন্তু কিছুদিন অপেক্ষার পর ফোন না পেয়ে বাধ্য হয়ে তারা বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যান।
এ ব্যাপারে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, অবকাঠামো, জনবলসহ সবকিছু থাকার পরও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের এই অচলাবস্থা দুঃখজনক। অনেক পরিবার টাকার অভাবে তাদের মাদকাসক্ত সন্তানের চিকিৎসা করাতে পারছে না। নিরাময় কেন্দ্রের জন্য প্রতিবছর সরকারের লাখ লাখ টাকা ব্যয় হলেও তা কোনো কাজে আসছে না।  
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর খুলনার উপপরিচালক মিজানুর রহমান জানান, খুলনায় মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়েছে। সে কারণে এখানে জরুরি ভিত্তিতে একজন চিকিৎসক দেওয়ার জন্য তারা অধিদপ্তরে একাধিকবার চিঠি দিয়েছেন। অধিদপ্তরের সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। এ ছাড়া কিছুদিন আগে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুলনা সফরে এলে তাঁকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। এখন তারা এখানে চিকিৎসক পদায়নের জন্য অপেক্ষা করছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়  সড়ক দুর্ঘটনায় জুয়েল মিয়া (৪০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরিফ (২০) নামের আরও একজন। 

শনিবার (১ নভেম্বর ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফতুল্লার পঞ্চবটি মেথর খোলার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতের  জুয়েল মিয়া (৪০) গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ভগবানপুর গ্রামের মো. শাহ আলমের ছেলে। 

তিনি পেশায় একজন দর্জি ছিলেন। নিহত জুয়েল বর্তমানে ফতুল্লার মুসলিম নগরে সালাম আহমেদের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। 
 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে রাস্তা পারাপারের সময় ময়দা ও আটা বোঝাই দুটি ট্রাকের মাঝখানে পড়ে দুজন আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে শহরের  খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুয়েল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আহত আরিফুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

 সংবাদ পেয়ে ফতুল্লা থানার উপ-পরিদর্শক আবু রায়হান নুর সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দুটি ট্রাক থানায় নিয়ে যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত)আনোয়ার হোসেন জানান,দূর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে দুটি ট্রাক থানায় নিয়ে এসেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক যে আছে মন
  • নিউ ইয়র্কে মেয়র নির্বাচন আজ, কুওমোকে সমর্থন ট্রাম্পের
  • ফিলিস্তিনি বন্দীকে নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস, ইসরায়েলে সেনাবাহিনীর সাবেক প্রসিকিউটর গ্রেপ্তার
  • ত্রাস সৃষ্টি, টার্গেট কিলিং: ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের অন্ধকারাচ্ছন্ন ভাবমূর্তি
  • ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের
  • বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু