ক্রিকেটারদের চুক্তিপত্রের বিষয়ে জানেই না বিসিবি
Published: 18th, January 2025 GMT
ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দিয়ে এবারের বিপিএলে নতুনত্ব আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর দায়িত্বহীন আচরণ সেই প্রতিশ্রুতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আম্পায়ারিং, অসদাচরণ, ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধা এবং পারিশ্রমিক ইস্যুতে চলমান আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে চমকপ্রদ এক তথ্য উঠে এসেছে—চুক্তিপত্র ছাড়াই বিপিএলে খেলছেন ক্রিকেটাররা। বিসিবি নিজেও এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়।
জাতীয় একটি দৈনিককে রাজশাহীর এক ক্রিকেটার বলেছেন, ‘টাকা তো পরের বিষয়, চুক্তিপত্রই হাতে পাইনি এখনো।’ পরে জানা যায়, শুধু রাজশাহী নয়, বিপিএলে এখন অবধি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্রিকেটারই পায়নি চুক্তিপত্র। এটি মূলত দিয়ে থাকে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। অথচ বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদিন ফাহিম শুক্রবার বললেন, তিনি এসব কিছু জানেন না।
এই বিষয়টি নিয়ে ফাহিমের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রশ্ন উঠলেও তাকে রক্ষা করতে অন্য পরিচালক ইফতেখার আহমেদ মিঠু উত্তর দেন, ‘যখন আমরা বিষয়টি জেনেছি, তখনই বোর্ড প্রেসিডেন্টসহ আমরা মিলে রাজশাহীর সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি।’
মিঠু আরও জানান, পারিশ্রমিক নিয়ে ক্রিকেটাররা অভিযোগ করলে বিসিবি ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, ‘যারা সমস্যায় পড়েছে, তাদের আমাদের জানাতে হবে। টিম ম্যানেজমেন্ট বা ক্রিকেটাররা অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে, চুক্তিপত্র ছাড়াও বিপিএলে অর্থনৈতিক জটিলতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। অনেক ক্রিকেটার এখনো পারিশ্রমিকের এক টাকাও পাননি। কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটারদের মোট পাওনার মাত্র ২৫ শতাংশ পরিশোধ করেছে। এসব বিষয়ে বিসিবি পরিচালক ফাহিম বলেন, ‘পারিশ্রমিক নিয়ে সমস্যা হলে বিষয়টি আমাদের কানে আসবে। রাজশাহীর ক্ষেত্রে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। অন্যদের ক্ষেত্রেও এমনটি হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
বিপিএলের নানা অনিয়মের জন্য বিসিবি সরাসরি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকেই দায়ী করছে। ফাহিম বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল এটি সেরা বিপিএল হবে। যারা এই যাত্রায় যুক্ত হবেন, তারা দায়িত্বশীল আচরণ করবেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আমরা সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখিনি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল ব যবস থ ব প এল ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’