ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের নিরঙ্কুশ জয়
Published: 19th, January 2025 GMT
ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ‘সমমনা আইনজীবী ঐক্য পরিষদ’ সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪টি পদে জয়লাভ করেছে। অন্যদিকে একটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) জেলা আইনজীবী সমিতির এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সমিতি ভবনে ভোটগ্রহণ চলে। নির্বাচনে মোট ৩৩৬ জন ভোটারের মধ্যে ৩১৫ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
সন্ধ্যায় ভোট গণনা শুরু হয় এবং রাত সাড়ে ৯টায় নির্বাচন কমিশনার সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো.
ঘোষিত ফলাফলে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ‘সমমনা আইনজীবী ঐক্য পরিষদ’ থেকে সভাপতি পদে মো. নুরুল আমিন খাঁন ২০০ ভোট এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ মীর মোশারফ হোসেন মানিক ১৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ জুলফিকার বুকুল ১১০ ভোট ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শাহ মোহাম্মাদ কায়কোবাদ ১৩৯ ভোট পেয়েছেন।
সমমনা আইনজীবী ঐক্য পরিষদ থেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রেজাউল করিম তুহিন ১৮৬ ভোট ও অডিটর পদে আব্দুল কুদ্দুস ১৮৪ ভোট পেয়েছেন।
এ পরিষদ থেকে সদস্য পদে নুরুল আবছার ২৫৬ ভোট, মোহাম্মদ খুরশিদ আলম মাহাদী ২৫৪ ভোট, ওছমান গনি মিরন ২৪৬ ভোট, হুমায়ূন কামাল ২৩৪ ভোট, আহমেদ উল্ল্যাহ অনিক ২৩১ ভোট এবং মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২২৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মো. আলা উদ্দিন ভূঁঞা ১৩৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
জয়ের পর নবনির্বাচিত সভাপতি মো. নুরুল আমিন খাঁন বলেন, “এ জয়ে আমরা আনন্দিত। আগামীর পথচলায় সকলের সঙ্গে আলোচনা করে আইনজীবীদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করে যাব।”
এবারের নির্বাচনে ১১ পদে ১৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তারমধ্যে ছয়টি পদে প্রার্থী হন স্বতন্ত্ররা। নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে মো. সফিউল আলম ও রহিমা খাতুন হেলপী, অর্থ সম্পাদক পদে আনোয়ার হোসেন, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মনসুর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা কোনো প্যানেল ঘোষণা না করলেও বিএনপি-জামায়াত সমমনা আইনজীবী পরিষদ প্যানেল ঘোষণা করে নির্বাচনে অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, গতবছর ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ‘সমমনা আইনজীবী ঐক্য পরিষদ’ সভাপতি-সম্পাদকসহ ১১টি পদে জয়লাভ করেছিল। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ‘সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ’ চারটি পদে জয়ী হয়েছিল।
ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বতন ত র সমর থ ত আইনজ ব হয় ছ ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ও টেলিকম কর্মকর্তা বঙ্কিম ব্রহ্মভট্টের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। ওই জালিয়াতির তিনিই মূল পরিকল্পনাকারী বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই কেলেঙ্কারির কারণে ব্ল্যাকরকের ঋণ শাখা এবং আরও কয়েকটি বৈশ্বিক বিনিয়োগকারী সংস্থার ৫০ কোটি কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এটিকে ‘বিস্ময়কর’ আর্থিক জালিয়াতির ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
কে এই বঙ্কিম ব্রহ্মভট্ট
ব্রহ্মভট্ট বৈশ্বিক টেলিকম-পরিষেবা শিল্পে অপেক্ষাকৃত অপরিচিত দুটি সংস্থা—ব্রডব্যান্ড টেলিকম ও ব্রিজভয়েসের সঙ্গে যুক্ত। দুটি সংস্থাই ব্যাঙ্কাই গ্রুপের অধীনে কাজ করে।
২০২৫ সালের জুলাই মাসে ব্যাঙ্কাই গ্রুপ এক্স (পূর্বের টুইটার)-এর একটি পোস্টে ব্রহ্মভট্টকে প্রেসিডেন্ট এবং সিইও হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল।
এক্সে দেওয়া ব্যাঙ্কাই গ্রুপের পরিচয় দেওয়া হয়েছে এভাবে—‘টেলিকমিউনিকেশন শিল্পে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত নেতা, যারা টেলকো, অপারেটর এবং আরও অনেকের সঙ্গে টেলিকম প্রযুক্তি ও ক্যারিয়ার ব্যবসায়িক সৌহার্দ্যকে লালন করে।’
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অনুসারে, ব্রহ্মভট্টের প্রতিষ্ঠান সারা বিশ্বের টেলিকম অপারেটরদের অবকাঠামো ও সংযোগের সরঞ্জাম সরবরাহ করে।
মনে হচ্ছে, ব্রহ্মভট্টের লিঙ্কডইন প্রোফাইলটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েক মাস আগেও ব্রহ্মভট্ট নিউইয়র্কের গার্ডেন সিটিতে অফিস চালাতেন।
জালিয়াতির ধরন
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলায় দাবি করা হয়েছে, ব্রহ্মভট্টের প্রতিষ্ঠানগুলোর ৫০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ বকেয়া রয়েছে। ব্ল্যাকরকের এইচপিএস ইনভেস্টমেন্ট পার্টনার্সের নেতৃত্বে ঋণদাতারা তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়া চালান ও ভুয়া পাওনা অ্যাকাউন্ট তৈরি করার অভিযোগ এনেছেন। বড় অঙ্কের ঋণের জন্য জামানত হিসেবে ওইসব অ্যাকাউন্ট বানানো হয়েছিল।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্রহ্মভট্টের প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল যখন ভারত ও মরিশাসে স্থানান্তর করা হয়েছিল, তখন তাদের নেটওয়ার্ক কাগজে-কলমে আর্থিক শক্তির একটি মায়াজাল তৈরি করা হয়েছিল।
তবে ব্রহ্মভট্টের আইনজীবী এই জালিয়াতির সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ঋণদাতারা দাবি করেছেন, ব্রহ্মভট্ট কারিওক্স ক্যাপিটাল ও বিবি ক্যাপিটাল এসপিভির মতো আর্থিক সংস্থার এক জটিল নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, যা ব্ল্যাকরকের মতো কয়েকটি বেসরকারি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটি কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ব্রহ্মভট্ট ভুয়া গ্রাহক চালান তৈরি করেন এবং সেই জাল কাগজপত্র দিয়ে জামানত তৈরি করে তার বিপরীতে ৫০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ নিয়েছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, পরে তিনি ভারত ও মরিশাসে সম্পদ স্থানান্তর করেন। এখন তাঁর দুটি কোম্পানি এবং ব্রহ্মভট্ট নিজে দেউলিয়া হওয়ার আবেদন করেছেন।
গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ব্রহ্মভট্টের আইনজীবী কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, জালিয়াতির সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।