কুড়িগ্রামে ব্রিজের নিচে মিলল ২ নবজাতকের মরদেহ
Published: 21st, January 2025 GMT
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানার বলদিয়া ইউনিয়নের তালতলা বেইলি ব্রিজের নিচ থেকে দুই নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে মরদেহ দুটি উদ্ধার হয় বলে জানিয়েছেন কচাকাটা থানার এসআই কার্তিক চন্দ্র রায়।
এলাকাবাসী জানান, আজ দুপুরে ব্রিজের নিচের খালে কয়েকজন গ্রামবাসী গোসল করতে যান। এসময় তারা পলিথিনে মোড়ানো একটি নবজাতকের লাশ ভাসতে দেখেন। অদূরে খালের কিনারায় শুকনো জায়গায় আরো একটি নবজাতকের মরদেহ দেখত পান তারা। দুই নবজাতকের মরদেহ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ ব্রিজের নিচে জড়ো হন। পরে বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সিদ্দিক আলীর কাছ থেকে খবর পেয়ে বিকেলে কচাকাটা থানার পুলিশ সদস্যরা মরদেহ দুটি উদ্ধার ও সুরুতহাল করে।
আরো পড়ুন:
নিখোঁজ শিক্ষকের মরদেহ মিলল পুকুরে
নদী থেকে পাওয়া মৃত শিশুর পোশাক দেখে নিজের সন্তান দাবি
বলদিয়া ইউনিয়নের পূর্ব কেদার গ্রামের বাসিন্দা সুজন মিয়া বলেন, “দুপুরে খবর পেয়ে ব্রিজের নিচে এসে দেখি দুই নবজাতকের মরদেহ পানিতে ভাসছে।”
ইউপি সদস্য সিদ্দিক আলী বলেন, “নবজাতকদের মরদেহ দেখে বয়স অনুমান করা সম্ভব হয়নি। দুটি নবজাতক কন্য। হয়তো জমজ। কে বা কারা ফেলে গেছে এ তথ্য পাওয়া যায়নি।”
কচাকাটা থানার এসআই কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, “মরদেহ দুটির সুরতহাল শেষে ইউনিয়ন চেয়াম্যানের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। চেয়ারম্যান মরদেহগুলো দাফন করবেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কুড়িগ্রাম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ মরদ হ দ
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।