রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, ভাঙচুর এবং আবু সাঈদ হত্যায় জড়িত অভিযোগে ৭১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৯তম সিন্ডিকেট সভার এ সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। তবে বেশির ভাগকে এক থেকে দুই সেমিস্টার বহিষ্কার করার এ সিদ্ধান্তকে ‘ছেলে ভোলানো’ জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ওই শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সভাপতি ড.

শওকাত আলী বলেন, তথ্য অনুসন্ধান কমিটি ৭২ শিক্ষার্থীর তালিকা দিয়েছিল। তাদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়েছে। বাকি ৭১ জনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা বোর্ড ৩৩ জনকে দুই সেমিস্টার, ২৩ জনকে এক সেমিস্টার এবং ১৫ প্রাক্তন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পমেল বড়ুয়া, শামীম মাহাফুজ, ধনঞ্জয় কুমার টগর, গ্লোরিয়াস (ফজলে রাব্বি), বাবুল, বিধান, তানভীর, আবদুল্লাহ আল নোমান খান, রিফাত, ফারহাদ হোসেন এলিট, মোমিনুল, আরিফুজ্জামান ইমন, গাজীউর, শাহিদ হাসান ও মামুন নামে ১৫ জনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নেবে। 

এ ছাড়া দুই সেমিস্টার বহিষ্কার শিক্ষার্থীরা হলেন– সেজান আহমেদ, আরাফাত রহমান আবির, আবু সালেহ নাহিদ, ইমরান চৌধুরী আকাশ, কফি আনান মান্নান, মাসুদুল হাসান, উজ্জ্বল মিয়া, হাবিবুর রহমান, সাখাওয়াত হোসেন, শোয়াইবুল, আব্দুল্লাহ আল রায়হান, বায়েজিদ মোস্তাফী, রাসেল, সিয়াম আল নাহিদ, অমিত, আখতার হোসেন, তানজিল, মুন্না হাসান লিওন, জিহান আলী, সাব্বির হোসেন (রিয়ান), গালিব হাসান, মাহমুদুর রহমান হৃদয়, মোশারফ হোসেন, পিপাস আলী, মোজাম্মেল হক, মৃত্যুঞ্জয় রায়, সাজ্জাদ হোসেন, মানিক চন্দ্র সেন, রবীন্দ্র রায়, সিয়াম আরাফাত, সাব্বির আহমেদ, মুসান্না-বিন-আহমেদ ও শাহীন ইসলাম। 

এক সেমিস্টার বহিষ্কৃতরা হলেন– হাসানুজ্জামান সৌমিক, সুদীপ্ত সরকার বাঁধন, জুবায়ের মাহমুদ, কোমল দেবনাথ, রিজন মণ্ডল, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ফিলিপ রায়, জিহাদ উল্লাহ, এস এম লাবু ইসলাম, জয়ন্ত চন্দ্র রায়, সবুজ কুমার, সবুজ মহন্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, জামাল মিয়া, তৌফিক কিবরিয়া, মেজবাহুল সরকার জয়, দেবাশীষ কুমার রায়, আতেফ আসহাব দিল মণ্ডল, নাফিউল ইসলাম, তপন চৌধুরী, সাজেদুর রহমান, আমিরুল ইসলাম শুভ ও শফিউল আযম ওরফে (সম্রাট)। 

তবে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ‘নামমাত্র’ জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে এ কর্মসূচি হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল ‘বিচারের নামে প্রহসন, মানি না, মানব না’, ‘ছেলে ভোলানো বিচার মানি না মানব না’, ‘প্রহসনের বিলম্ব অপরাধীর সার্টিফিকেট নিয়ে পালানো’সহ নানা প্ল্যাকার্ড। 

কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, প্রশাসনের ভুলে গেলে চলবে না, তারা যে চেয়ারে বসে আছে তা জুলাই বিপ্লবের ফসল। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে এবং সার্টিফিকেট বাজেয়াপ্ত করতে হবে। 

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলেন, এক-দুই সেমিস্টার বহিষ্কারের এই মুলা ঝুলানো শাস্তি আমরা মেনে নেব না। যাদের অনার্স শেষ হয়েছে, তারা সার্টিফিকেট তুলে নিয়ে গেছে। ওই সার্টিফিকেট তারা কার সাহায্যে তুলে নিয়ে গেছে, তা তদন্ত করে বের করতে হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য র রহম ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রীবরদীতে ভারতীয় জিরা নিয়ে তুলকালাম

শেরপুরের শ্রীবরদী সীমান্তে ১৬ বস্তা ভারতীয় চোরাই জিরা ও কাপড় আটক করেছেন স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় স্বার্থান্বেষী একটি মহল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সেসব জিরা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে অন্য একটি পক্ষ আবার সেই জিরা আটক করে। এ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ভায়াডাঙ্গা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। 

পরবর্তীতে হাসধরা এলাকায় দ্বিতীয়বার আটক হয়। এসময় স্থানীয়রা বেশকিছু বস্তা জিরা লুট করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশ ও বিজিবিকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মালামাল উদ্ধার করে তাওয়াকুচা বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। 

স্থানীয়রা জানান, রাত ৯টার দিকে ভারতীয় চোরাই জিরা ও কাপড় বোঝাই একটি ট্রলি ঝিনাইগাতী থেকে ভায়াডাঙ্গা বাজার দিয়ে শ্রীবরদী হয়ে শেরপুরের দিকে যাচ্ছিলো। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ট্রলিটি আটক করে। এসময় ট্রলি চালক কৌশলে পালিয়ে যায়।

সেসময় স্থানীয় অপর একটি পক্ষ সুকৌশলে আরেক চালককে দিয়ে ট্রলিটি সরিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার সাথে সাথে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে হাসধরা এলাকায় ট্রলিটি আবার আটক হয়। এসময় প্রায় অর্ধেক মালামাল লুট করে এক পক্ষ। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইমন আকন্দ বলেন, “আমরা ভায়াডাঙ্গা বাজারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পরবর্তীতে স্থানীয় কয়েকজন নেতা নতুন করে অন্য ড্রাইভার দিয়ে ট্রলি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা অবৈধ পাচার হওয়া মালামাল জব্দ হোক এটাই চাই। এছাড়াও যারা মালামাল লুট করেছে এবং এই পাচারের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।” 

এ ব্যাপারে শ্রীবরদী তাওয়াকুচা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার আতিয়ার রহমান বলেন, “আমরা স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৬ বস্তা অবৈধ মালামাল জব্দ করেছি। এই ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।”

শ্রীবরদী থানার উপ-পরিদর্শক সুলতান আহমেদ বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বেই বিজিবি মালামাল জব্দ করেছে। এই ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যৌতুকের জন্য জখম: ভুক্তভোগী নারীর জন্য বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা তুলে দিতে হবে
  • শ্রীবরদীতে ভারতীয় জিরা নিয়ে তুলকালাম
  • যুগপৎ কর্মসূচির বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি: জামায়াত নেতা তাহের
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা