রাজধানীতে দিন-দুপুরে অপহরণের মুখে পড়েছিলেন বলে দাবি করেছেন চিত্রনায়িকা নিঝুম রুবিনা। তাঁর ভাষ্য, বিপদ আঁচ করে রাইড শেয়ারিংয়ের গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন তিনি।

বনশ্রী থেকে ধানমন্ডি যাওয়ার পথে মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা নিজের ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন নিঝুম। সেখানে ভিডিও বার্তায় ভয়াবহ ঘটনার কথা মনে করে কান্না করেন তিনি।

পোস্টে উবার চালকের ছবি শেয়ার করে বিস্তারিত তুলে ধরেন নিঝুম। তিনি লিখেছেন, ‘স্বামী গ্রামের বাড়ি গেছে। এ কারণে নিজের গাড়ি রেখে বের হতে হই। আমি ড্রাইভিং পারি না। উবার কল করি বনশ্রী থেকে ধানমন্ডি যেতে। উবার চালক হাতিরঝিলে উঠে সরাসরি ধানমন্ডির রোডে না ঢুকে গুলশানের দিকে প্রবেশ করেন।’ জানতে চাইলে বলেন, ‘আপনার লোকেশনেই যাচ্ছি চুপ থাকেন’। মঙ্গলবার রাস্তা ফাঁকা, তারপরও তিনি গুলশান রোডে ঢুকেন।

পরের ঘটনা উল্লেখ করে নায়িকা লেখেন, ‘গাড়ির গতি প্রায় ৮০ থেকে ১০০। হাই স্পিডে চালাচ্ছিলেন। বিষয়টি আমার কাছে সন্দেহ লাগে। তাকে বলি, আমাকে এখানেই নামিয়ে দেন।’ তখন তিনি আমাকে বললেন, “চুপ থাক, কোনো কথা বলবি না।’ তারপর আমি গাড়ির গ্লাস তুলে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করি। কারও সাড়া পাইনি। এক পর্যায়ে গাড়ির গতি একটু কম মনে হলে লাফ দিয়ে নেমে যাই।”

নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি লেখেন, ‘আমরা কোন দেশে বাস করছি? দিন-দুপুরেও কি নিরাপত্তা পাব না? উবার থেকে এমন হলে কাকে ভরসা করব? আজ গাড়ি থেকে জাম্প দিয়ে যদি না নামতাম, তাহলে আমাকে কি খুঁজে পাওয়া যেত?’ পরে এ ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানান নিঝুম।

নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এর বেশি ভালোবাসা যায় না’ সিনেমার মাধ্যমে ২০১৩ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক নিঝুম রুবিনার। এর পর তিনি ‘অনেক সাধনার পরে’, ‘মেঘকন্যা’, ‘বেসামাল’, সর্বশেষ ‘লিপিস্টিক’ ছবিতে অভিনয় করেছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের