উন্নয়নের নামে ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে আ.লীগ
Published: 24th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই ফ্যাসিস্টদের আশ্রয় বাংলার মাটিতে হবে না। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন কাজ করা হবে। সব হত্যার বিচার চাই। সত্যের পথে দেশ গড়ার জন্য জামায়াতের পাশে থাকুন। মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।”
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যারা লুটপাট করেছে, ইজ্জতে হাত দিয়েছে, এই দুষ্কৃতকারীদের তালিকা করে প্রকাশ করা হোক। আমি অপরাধী হলে আমার নামও প্রকাশ করা হোক। বাংলাদেশের মানুষ জানুক, এরা কারা।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের যত জায়গায় অমুসলিম ভাইদের ঘর-বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে, আওয়ামী লীগ জড়িত ছিল। কিন্তু, সবার আগে নাম আসে জামায়াতের। আমরা আল্লাহকে ভয় করি। যারা আল্লাহকে ভয় করে, তাদের হাতে মানুষের জীবন, সম্পদ এবং ইজ্জত সম্পূর্ণ নিরাপদ। তার প্রমাণ বর্তমান বাংলাদেশ।”
‘আওয়ামী লীগ বলেছিল, কোনোদিন যদি তাদেরকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়, তাহলে তাদের ৫ লাখ নেতাকর্মীকে আমরা খুন করব। তাদের নেতৃবৃন্দের দফায় দফায় মিথ্যাচার বাস্তবায়িত হয়নি। ৫ লাখ লোক মারা যায়নি। এ দেশের মানুষ দেশকে ভালোবেসে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। খুনিদের মুখে চুনকালি। তারপর বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকজনকে উসকানি দিলেও তারা সে উসকানি ওদের মুখের ওপর ছুঁড়ে দিয়েছে,” বলেন ডা.
জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা বলেন, “তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। কিন্তু, কার ইঙ্গিতে এটা বন্ধ হয়ে আছে? ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে এটা হয়নি। কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ী যুদ্ধের প্রতিশোধ নিতে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।”
তিনি বলেন, “সমাজে অনাচার ও চাঁদাবাজি যারা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা মুখ বন্ধ করে থাকব না। এজন্য আমরা রাজনীতি করি। সব দল ও ধর্মের লোকজন ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।”
ক্ষমতায় গেলে সমতার ভিত্তিতে সব জেলার উন্নয়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির।
কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ব্যারিস্টার সালেহীন, কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির সাবেক আমির আজিজুর রহমান স্বপন এবং বর্তমান আমির মো. আব্দুল মতিন ফারুকী। সম্মেলনে কুড়িগ্রামের নয় উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
ঢাকা/বাদশাহ্/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।