বন্দরে ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র
Published: 27th, January 2025 GMT
বন্দরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয়ে নিরীহ দোকানীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে অজ্ঞাতনামা এক প্রতারকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এরূপ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় বন্দরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রহিমা আক্তার ইতি বাদী হয়ে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আমি ইতি (৩৫), পিতা- মোঃ আব্দুর রব খান, সাং- উপজেলা ভূমি বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, আপনার বন্দর থানায় হাজির হয়ে অজ্ঞাতানামা বিবাদীদের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করছি যে, আমি উপজেলা পরিষদে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে কর্মরত আছি।
সোমবার সকাল অনুমান ১১টায় আমার দায়িত্বরত উপজেলার অধীনস্থ কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ কাউসার আমাকে মোবাইল ফোনে জানান যে, অজ্ঞাতনামা একটি মোবাইল নাম্বার ০১৮৬০-৪৯২৫৭৭ হতে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মাসুম এর নিকট ফোন করে নিজেকে বন্দর উপজেলা পরিষদের এসিল্যান্ড হিসেবে পরিচয় দেয় এবং ইউনিয়ন পরিষদ হতে স্থানীয় একটি বেকারীতে গ্রাম পুলিশ পাঠানোর কথা বলে।
সে সময় ইউনিয়ন পরিষদ উদ্যোক্তা কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ হতে গ্রাম পুলিশ মঞ্জুকে পাঠায়। গ্রাম পুলিশ মঞ্জুর মোবাইল নাম্বার ০১৮৪৫- ৬১৫৯৪৪ এ উক্ত অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি কথাবার্তা বলে এবং গ্রাম পুলিশ মঞ্জুকে দিয়ে প্রথমে বেকারীর লোকজনদের সাথে কথাবার্তা বলে এবং পরবর্তীতে তাকে বন্দর থানাধীন সাবদি বাজারস্থ একটি মিষ্টির দোকানে যেতে বলে।
অজ্ঞাতামা ব্যক্তি মিষ্টির দোকানদারের সঙ্গে কথাবার্তা বলা শেষ হলে উক্ত মিষ্টির দোকানদার গ্রাম পুলিশ মঞ্জুর নিকট নগদ ৭৮০০/- টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে নিজেকে এসিল্যান্ড হিসেবে পরিচয় প্রদানকারী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি গ্রাম পুলিশ মঞ্জুকে একটি বিকাশ নাম্বার ০১৮৬০-৪৯১৮৩৩ দেয় এবং গ্রাম পুলিশ মঞ্জু বিকাশের দোকান হতে উক্ত নাম্বারে ৭৮০০/- টাকা পাঠিয়ে দেয়। উক্ত বাক্তি মঞ্জুকে দিয়া আরো কয়েকটি দোকানে এইভাবে টাকা নেয়ার চেষ্টা করলে এক পর্যায়ে বিষয়টি তাদের সন্দেহ হয় এবং আমাকে উক্ত বিষয় জানায়।
অজ্ঞাতনামা কে বা কারা মোবাইলে ফোন করে নিজেকে এসিল্যান্ড পরিচয় দিয়ে প্রতরণার মাধ্যমে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করেছে। পরবর্তীতে তাদের নিকট হতে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনে বিষয়টি বন্দর উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে থানায় ও অভিযোগ দায়ের করে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ কল গ ছ য় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক