‘শেষ ম্যাচে হয়তো কেউ না কেউ বলবে খেলতে পারব না’
Published: 28th, January 2025 GMT
প্রথম আসরে রানার্সআপ। দ্বিতীয় আসরে পয়েন্ট তালিকার ছয়ে শেষ করে সফর। এবার একেবারে তলানিতে। সাত দলের আয়োজনে এখন পর্যন্ত সপ্তম।
সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপিএল যাত্রা যেই উচ্চতায় শুরু হয়েছিল, ধারাবাহিকভাবে পরের দুই আসরে তা নিচে নেমেছে। বিগ বাজেটের দল গড়তে না পারায় মাঠের ক্রিকেটে শক্তিতে পারেনি দলটি। তবে একেবারেই যে খারাপ দল ছিল তা-ও নয়।
জাকির হাসান, জাকের আলী, রনি তালুকদার, তানজিম হাসান সাকিবদের মতো পরীক্ষিত ক্রিকেটাররা ছিলেন। বিদেশীদের মধ্যে বড় নাম না পেলেও রাকিম কর্ণওয়াল, জর্জ মুনজে, পল স্টারর্লিং, রিচ টপলিকে দলে এনেছিলেন তারা। অধিনায়ক হিসেবে আরিফুল হককে নিয়েছিল। কিন্তু পুরো দলটাই হতশ্রী পারফরম্যান্সে হতাশ করেছে।
কখনো তাদের ব্যাটিং ভালো হয়েছে তো, কখনো বোলিং।দুই বিভাগ একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পেরেছে খুব কম সময়ই। আবার ছোট-বড় ভুলে দিতে হয়েছে বড় খেসারত। ইনজুরির সঙ্গেও লড়তে হয়েছে তাদেরকে। সব মিলিয়ে বিপিএলের এবার সফর তারা নিশ্চিতভাবেই ভুলে যেতে চাইবে।
গতকাল রাজশাহীর বিপক্ষে নিজেদের নবম হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা পায় সিলেট। ম্যাচ হারের পর অধিনায়ক আরিফুল এসেছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। নিজেদেরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো বাদে বেশি কিছু করার নেই তার, ‘‘আসলে আশা যদি না থাকলে তাহলে কঠিন হয়ে যায় পারফর্ম করা। সবাই পেশাদার ক্রিকেটার। যে ভালো খেলে সেটা ব্যাটসম্যান হোক বা বোলার তারা যদি ভালো খেলে তাহলে ভালো লাগে। দিন শেষে ভালো করা গেলে আসলে ভালোই লাগবে। কিন্তু আমরা এবার কেউই ভালো করিনি। পুরো দলটা খারাপ করেছি।’’
‘‘পুরো টুর্নামেন্ট খুবই বাজে গেছে। খুবই বাজে গেছে।এরকম অভিজ্ঞতা আগে কখনো হয়নি। ম্যাচের দিন…আজকেও সকালে আমাদের ওপেনার ব্যাটসম্যান রনি ঘুমের থেকে উঠে বলছে ‘‘আমার ঘাড়ে লাগছে’’। ওকেও ধরতে হবে ইনজুরড। এই দলে দেখা যাবে শেষ ম্যাচেও হয়তো বা কেউ না কেউ বলছে ‘আমি খেলতে পারব না।’ অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ।’’ – বলতে থাকেন আরিফুল।
দলের যা অবস্থা তাতে শেষ ম্যাচটা ‘বারডেন’ হয়ে গেছে কিনা সেই প্রশ্নও উঠল। আরিফুল অবশ্য বিষয়টিকে ওভাবে দেখছেন না, ‘‘আসলে আরেকটা ম্যাচ বারডেন না। আমরা যদি শেষ ম্যাচটাও জিতে যেতে পারি তারপরও নিজের কাছে শান্তি আসবে যে নাহ একটা জিতে শেষ করেছি।’’
এর আগেও বিদেশী ক্রিকেটারদের থেকে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না পাওয়ার আক্ষেপ করেছিলেন আরিফুল। গতকালও সেই কথাই শোনালেন,‘‘আমরা যদি রাকিমের থেকে ফুল সার্ভিসটা পেতাম। মানজি যদি পুরো আসরটা ভালো খেলত। পল স্টারর্লিং থেকে সার্ভিসটা পেতাম…ওরা কিন্তু ফ্রাঞ্চাইজি আসরগুলোতে বড় নাম। কিন্তু তারা কেউই ভালো করতে পারেনি।’’
৩০ জানুয়ারি সিলেটের শেষ ম্যাচ চিটাগং কিংসের বিপক্ষে। ম্যাচটা সিলেটের জন্য গুরুত্বহীন হলেও চিটাগং কিংসের প্লে অফ নিশ্চিতের জন্য অনেক গুরুত্বের।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়’
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে আল-নাসর। তবে মাঠের ফলাফলের চেয়েও এখন আলোচনায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর প্রতিক্রিয়া। ম্যাচ শেষে তার ‘বিষণ্ণ ও নাটকীয়’ আচরণ উপহাস হিসেবে দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
বুধবার রাতে জেদ্দার আলিনমা স্টেডিয়ামে জাপানি ক্লাব কাওয়াসাকি ফ্রন্টেলের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হারে সৌদি ক্লাব আল-নাসর। এই পরাজয়ে রোনালদোর দলের সামনে চলতি মৌসুমে আর কোনো ট্রফি জয়ের সুযোগ থাকল না। সেমিফাইনালের ম্যাচটিতে রোনালদো একটি সুবর্ণ সুযোগও নষ্ট করে। প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষককে কাটিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন পর্তুগিজ মহাতারকা। সমর্থকদের মতে, রোনালদোর গোল মিস করাটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
ম্যাচ শেষে হতাশ রোনালদোকে দেখা যায় মাঠের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে নিজে নিজে কথা বলতে ও আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুটা নাটকীয় ভঙ্গিতে হাত নেড়েছেন। তার এই অদ্ভুত আচরণ নিয়েই এখন সরগরম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
একজন টুইটারে লিখেছেন, ‘রোনালদোর জন্য ‘ফুটবলকে ছেড়ে দাও, তার আগেই যে ফুটবল তোমাকে ছাড়বে’—এই কথাটা একেবারে যথার্থ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এই লোকটা এখন আর মজার না… শুধু অহঙ্কারে ভরা।’
তৃতীয় একজন মন্তব্য করেছেন, ‘মেসির বিশ্বকাপ জয় মানসিকভাবে শেষ করে দিয়েছে রোনালদোকে।’ অন্য একজন কটাক্ষ করে বলেন, ‘ক্যামেরার জন্য এমন মরিয়া চেষ্টাও এক রকম প্রশংসার দাবি রাখে—যদি না সেটা এত করুণ হতো।’
অনেকে আবার রোনালদোর স্বার্থপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়।’
তবে এত সমালোচনার পরও অবসরের কোনো ইঙ্গিত দেননি রোনালদো। বরং সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে দলের প্রতি নিজের গর্বের কথা জানান তিনি। রোনালদো লেখেন, ‘সবসময় স্বপ্ন পূরণ হয় না। তবে আমি গর্বিত আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে। যারা আমাদের পাশে থেকেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সমর্থন আমাদের অনেক কিছু বলে।’
এদিকে ম্যাচ শেষে আল-নাসরের কোচ স্তেফানো পিওলি দলের পারফরম্যান্সে ক্ষোভ ঝাড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কৌশলে সমস্যা ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে ঝুঁকি নিয়েছিলাম। তবে যে পারফরম্যান্স হয়েছে, তা হতাশাজনক। প্রতিপক্ষ আমাদের চমকে দেয়নি, বরং নিজেদের দুর্বলতাই বড় ধাক্কা দিয়েছে।’
এই হারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়েছে আল-নাসর, আর প্রশ্নটা থেকে গেছে—রোনালদো আসলে কোথায় গিয়ে থামবেন?