নরসিংদীতে ঘরে ঢুকে এক কিশোরীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর জখম করা হয়েছে কিশোরীর মাকে।  সোমবার রাতে নরসিংদী সদর উপজেলার শেখেরচর-বাবুরহাট বাজারসংলগ্ন চা দোকানি মোফাজ্জল হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত সুমনা আক্তার তিথি (১৩) মোফাজ্জলের মেয়ে এবং আহত আসমা বেগম (৪০) তাঁর স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ওই বাসায় স্ত্রী, মেয়ে তিথি ও চার বছরের প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে থাকতেন মোফাজ্জল। সোমবার রাত ১১টার দিকে মোফাজ্জল দোকান থেকে বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। প্রতিবন্ধী শিশুসন্তানকে অক্ষত অবস্থায় পান বাথরুমে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্ত্রী ও মেয়েকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তিথিকে মৃত ঘোষণা করেন। আর আসমা বেগমকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি এখন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ছোট বাড়িটির নিচতলায় কাপড়ের দোকানের গোডাউন। দোতলায় আমরা থাকি। মেয়ে তিথি স্থানীয় মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। কে বা কারা কী কারণে এমন করল, বুঝতে পারছি না।

শেখেরচর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাসুদ আলম বলেন, তিথির মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল।

নরসিংদী সদর থানার ওসি এমদাদ হোসেন বলেন, কী কারণে এবং কারা এ ঘটনায় জড়িত, তা তাৎক্ষণিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নরস দ

এছাড়াও পড়ুন:

মামলা থেকে বৈষম্যবিরোধী নেতাকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ, ওসির অপসারণ চেয়ে ঝাড়ুমিছিল

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী শাহরিয়ার শিশিরের (২৪) ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে বিলম্ব, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ফয়সাল মোস্তাকের নামে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানানোর প্রতিবাদ এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান জাহিদকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও ঝাড়ুমিছিল হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলা শহরের চৌরাস্তা মোড়ে শতাধিক নারী–পুরুষ এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন। পরে ঝাড়ু হাতে মিছিল নিয়ে থানার প্রধান ফটকে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

মানববন্ধনে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন আহত শাহরিয়ার শিশিরের বাবা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান, সেতাবগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি নওশাদ আলী, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোজাহারুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেদওয়ানুল কারীম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রিয়াদ চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বোচাগঞ্জের মাটিতে একের পর এক সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ওসি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেন না। শিশিরের ওপর হামলাকারীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ফয়সাল মোস্তাকের অনুসারী। তাঁর হুকুমেই শিশিরের ওপরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে হামলার ঘটনায় আহত শিশিরের বাবা থানায় মামলা করতে গেলে ওসি চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম এজাহার থেকে বাদ দিতে বাধ্য করেন। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। বক্তারা এ সময় অবিলম্বে বোচাগঞ্জ থানার ওসি হাসান জাহিদের অপসারণ ও কিশোর গ্যাংয়ের সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

৯ জুন দুপুরে উপজেলার সুবিদহাট এলাকার সেতাবগঞ্জ চিনিকল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ক্রিকেট খেলতে গেলে শাহরিয়ার শিশির মারধরের শিকার হন। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে শিশিরের বাবা বোচাগঞ্জ থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং সাত থেকে আটজনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে একটি মামলা করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র ফয়সাল মোস্তাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকায় নোংরা রাজনীতি শুরু হয়েছে। উপজেলায় কোথায় কী ঘটছে, তার দায়ভার এসে পড়ছে আমার ওপরে। এখন মনে হচ্ছে এই এলাকায় জন্মগ্রহণ করাটাই আমার পাপ হয়েছে। যাঁরা আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

জানতে চাইলে বোচাগঞ্জ থানার ওসি হাসান জাহিদ বলেন, ৯ জুন শাহরিয়ার শিশির নামের এক ছেলেকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি সংশ্লিষ্ট আসামিরা আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। এখানে নিজেদের মধ্যে দুটি পক্ষ হয়েছে। সংক্ষুব্ধ হয়ে একটি পক্ষ এ ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু কারও কথায় প্ররোচিত হয়ে নয়, আইন চলে তার নিজস্ব গতিতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ