দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশনে যারা কাজ করছেন- তারা যদি দুর্নীতিতে না জড়ান তাহলে দুর্নীতি অনেকাংশেই কমে আসবে। এই সমাজে একেবারেই দুর্নীতি নির্মূল হবে সেটা আমি বলছি না। দুর্নীতি পুরোনো আমলেও ছিল ভবিষ্যতে থাকবে। কিন্তু ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা হলে দুর্নীতি আমরা অনেকটাই কমিয়ে নিয়ে আসতে পারব।

বুধবার সকালে কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে দুদকের গণশুনানী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের প্রধান আকাঙ্ক্ষা- একটি ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠন। এজন্য প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সকলের সদিচ্ছা। যদি আমাদের সদিচ্ছা থাকে তাহলে দুর্নীতি অনেকটাই কমে আসবে। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত কিংবা বিভিন্ন সময়ে যে আন্দোলন হয়েছে বা হচ্ছে তার পেছনের কারণটা কী? কারণ হচ্ছে, সমাজে আমরা এক ধরনের অবিচার লালন করি। প্রতিটি অবিচারের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে- এর মূলে রয়েছে দুর্নীতি।

তিনি বলেন, দুর্নীতির যে চলমান সংকট; এই সংকট কিন্তু সেবাগ্রহীতাকে নিয়ে নয়- সেবাদাতাকে নিয়ে। সেবাগ্রহিতার প্রত্যাশা থাকতেই পারে ভালো সেবা পাওয়ার। কিন্তু যারা সেবাদাতা তারা এক অর্থে আমলা। এখন সেই আমলারা যদি অপব্যবহার না করেন, ক্ষমতাকে দায়িত্ব মনে করেন- তাহলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলেই দুর্নীতি কমে আসবে। শুনানিতে দুদক চেয়ারম্যান বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের তা তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) হাফিজ আহ্সান ফরিদ, কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আবুল হোসেন, কুমিল্লা জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আলহাজ শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান।

গণশুনানি পরিচালনা ও সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)  বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।” 

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/চন্দন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ