গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর সকালে যুবদল নেতার মৃত্যু, শরীরে আঘাতের চিহ্ন
Published: 31st, January 2025 GMT
কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর হাসপাতালে তৌহিদুল ইসলাম (৪৫) নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।
ওই যুবদল নেতার ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু সাংবাদিকদের জানান, আমার বাবা গত চার দিন আগে মারা গেছেন। শুক্রবার ছিল তাঁর কুলখানি। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি আমাদের বাড়ি আসে। এ সময় পোশাক ও সিভিলে থাকা কয়েকজন আমার ভাইয়ের কাছে অস্ত্র আছে– এমন অভিযোগে রুমে রুমে তল্লাশি করে। তাঁর কাছে অস্ত্র নেই আমরা বারবার বলার পরও তারা তৌহিদকে ধরে নিয়ে যায়। সকাল থেকে আমরা থানায় ভাইয়ের খোঁজ নিয়েও পাইনি।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মোরশেদ মোবাইল ফোনে আমাদের জানান, শহরতলির গোমতীপারের গোমতী বিলাশ নামক স্থান থেকে আমার ভাইকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েছে। আমরা হাসপাতালে গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
হাসপাতালের সামনে আহাজারি করে আজাদ বলেন, রাজনীতির কারণে আমার ভাই কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছে। তাঁকে কেন এভাবে মারা হলো। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন তিনি।
এসআই মোরশেদ বলেন, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোমতীপারের ঝাকুনিপাড়ার গোমতী বিলাশে গিয়ে যখন সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে তৌহিদকে গাড়িতে উঠাই, তখনও তাঁর প্রাণ ছিল। কিন্তু কুমেক হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার সময় সে অসুস্থবোধ করায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তিনি বলেন, পরিবার থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ না পেলেও পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় একটি মামলা আছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ারুল হক বলেন, যুবদল নেতা তৌহিদ তাদের দলের একজন সৎ ও নিবেদিত নেতা ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তাঁর দুই মেয়ে রয়েছে। সে অস্ত্রধারী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তের দাবি করছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বদল য বদল ন ত তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্কুলছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, যুবক গ্রেপ্তার
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্কুলছাত্রীকে (১৫) শ্বাসরোধে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক যুবকে বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত জুনেল মিয়াকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তিনি।
গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে জুনেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান।
জুনেলের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে জুনেল মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু মেয়েটি সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হন জুনেল। ১২ জুন বিকেলে স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টার থেকে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে জুনেল আবারও তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে মুখ চেপে ধরে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের ছড়ার ঝোপে লাশ ফেলে পালিয়ে যান।
নিখোঁজ হওয়ার পর ১২ জুন ছাত্রীর পরিবার কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। দুই দিন পর ১৪ জুন বিকেলে বাড়ির পাশের ছড়ায় তার লাশ পাওয়া যায়। ওই রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন মেয়েটির মা। পরে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গতকাল রাতে জুনেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার জুনেলকে আজ মৌলভীবাজার আদালতে পাঠানো হবে। সেখানে ১৬৪ ধারায় তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।