মাদারীপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ
Published: 1st, February 2025 GMT
মাদারীপুর সদর উপজেলায় বালু ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে তিনজন আহত হয়েছেন। এসময় সেখানে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার পূর্বরাস্তি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে ড্রেজার বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র বালু উত্তোলন করছে। এই চক্রের অন্যতম সদস্য হলেন মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠু হাওলাদার এবং হাকিম বেপারী। বালু
উত্তোলনের অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে এই দুই জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এরই জেরে শুক্রবার রাতে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের তিনজন আহত হন।
আরো পড়ুন:
নাচোলে খাসজমি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু
সাতক্ষীরায় বিএনপির দু’ গ্রুপে সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি
আহতরা হলেন- সদর উপজেলার পূর্বরাস্তি এলাকার নিশাত হাওলাদার (২০), লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার সালমান হোসেন (২০) ও মুন্না ব্যাপারী (২৫)। তাদের মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয় জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠু হাওলাদার বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে এলাকাছাড়া। এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। হাকিম বেপারী এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই লোকজন দিয়ে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন।”
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত হাকিম বেপারীর ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বাড়িতেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, “বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আবারো সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।”
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত সদর উপজ ল স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।