দ্বিপক্ষীয় সফরে আফ্রিকা গেলেন পররাষ্ট্র সচিব
Published: 3rd, February 2025 GMT
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য আফ্রিকা গেছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। এ সফরে আফ্রিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দুই দেশ মিসর ও আলজেরিয়ার সঙ্গে দ্বিতীয় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’ (এফওসি) করবেন তিনি। দ্বিপক্ষীয় এ সফরের উদ্দেশে গতকাল রোববার ঢাকা ছাড়েন সচিব।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও আলজেরিয়া এবং ৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও মিসরের মধ্যে সচিব পর্যায়ের দ্বিতীয় দ্বিপক্ষীয় আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল অংশ নেবে।
জানা গেছে, মিসর ও আলজেরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার প্রসার ও রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য আনার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া আলজেরিয়ার সঙ্গে জ্বালানি খাতে সহযোগিতার উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকায় এবারের এফওসিতে এ বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে জ্বালানিবিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক আলোচনায় রয়েছে। আলজেরিয়ার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও বাংলাদেশের এফবিসিসিআই এবং মিসরের ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দুটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি এবং ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স আলজেরিয়ার মধ্যকার সহযোগিতা-সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা এ সফরে সই হতে পারে। এর আগে ২০২২ সালে ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আলজেরিয়ার মধ্যে এবং ২০১৮ সালে ঢাকায় বাংলাদেশ ও মিসরের মধ্যে প্রথম দ্বিপক্ষীয় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য-বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে: ঢাকা চেম্বার
বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সংস্থাটি বলছে, কড়াকড়ি মুদ্রানীতির প্রভাবে ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে ডিসিসিআই জানায়, ২০২৫ সালের জুনের শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে ৬.৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ধারা অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। চেম্বার মনে করে, ব্যবসায়িক পরিবেশে অনিশ্চয়তা, আইন-শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ, জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি এবং কঠোর মুদ্রানীতির কারণে ঋণ প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী ধারা আরো তীব্র হচ্ছে।
ডিসিসিআই আরো জানায়, ঋণ প্রবাহ সংকুচিত হওয়ার ফলে খেলাপি ঋণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকায়, যা ব্যাংকিং খাতে মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ২৭.০৯ শতাংশ। এ পরিস্থিতি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ব্যবসায়িক আস্থা হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিসূদ হার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে-যা ক্ষুদ্র, কুটির, ছোট ও মাঝারি শিল্পসহ উৎপাদনমুখী খাতগুলোর জন্য বড় চাপ তৈরি করছে বলে মনে করে ডিসিসিআই। সংস্থাটির ভাষ্য, দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ সুদের হার উৎপাদন ও বিনিয়োগ খাতে ঋণের ভার বাড়াচ্ছে, ফলে সামগ্রিক অর্থনীতির গতিশীলতা ব্যাহত হচ্ছে।
চলতি মুদ্রানীতিতে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৫) বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আরো কমিয়ে ৭.২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে আগের ছয় মাসে তা ছিল ৯.৮ শতাংশ। বিপরীতে সরকার খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২০.৪ শতাংশ করা হয়েছে। ঢাকা চেম্বারের মতে, এ ব্যবস্থায় সরকারি খাতের চাহিদা মেটাতে গিয়ে বেসরকারি খাতের জন্য আর্থিক খরচ ও প্রতিযোগিতা উভয়ই বেড়ে যাবে।
এ অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে নীতিসূদ হার হ্রাস এবং ঋণ গ্রহণের শর্তাবলি সহজ করার আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই। তারা সৎ ঋণগ্রহীতাদের রক্ষায় সহায়তা এবং তাৎক্ষণিক খেলাপি শ্রেণিতে পড়া এড়াতে ঋণ শ্রেণিবিন্যাসে সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
সংস্থাটি মনে করে, টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে হলে আর্থিক খাতে কাঠামোগত সংস্কার, ঋণ বরাদ্দে স্বচ্ছতা এবং বাজারে তারল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে।
চূড়ান্তভাবে ডিসিসিআই বলছে, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা, বেসরকারি খাতে আস্থা পুনরুদ্ধার ও বিনিয়োগ বাড়াতে আরো নমনীয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও খাতভিত্তিক প্রতিক্রিয়াশীল মুদ্রানীতির বিকল্প নেই।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ