চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের ডিসি পার্কে ফুল উৎসবে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা। পার্কের গেটসহ তারা ভাঙচুর করেছে ২০টির বেশি দোকান। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ফুল উৎসবে আসা দর্শনার্থী, গাড়িচালক, হেলপারসহ শতাধিক ব্যক্তি। পরে সেনাবাহিনীর টিম এলে রাত সাড়ে ১০টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর সংযোগ সড়কের ডিসি পার্কে মাসব্যাপী ফুল উৎসবে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটে। হামলার জেরে ফুল উৎসব স্থগিত করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ডিসি পার্কের গেটের সামনে একটি কার পার্কিং রয়েছে। এর দক্ষিণে লরি ও কাভার্ডভ্যান দাঁড়ালে কার পার্কিংয়ে দায়িত্বরতদের সঙ্গে চালকদের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় পার্কের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন এসে ট্রাকচালকদের মারধর করেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ট্রাকচালকসহ বহিরাগতরা পার্কের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। তারা পার্কের ভেতরে ফুল উৎসবের ২০টির বেশি অধিক দোকান ভাঙচুর করেন।

ডিসি পার্কে ফুল উৎসবে আসা দর্শনাথী রাবেয়া বেগম বলেন, হঠাৎ করে লাঠি নিয়ে কিছু যুবক হামলা শুরু করে। এতে তাঁরসহ অনেক দর্শনার্থীর মোবাইল ও ভ্যানেটি ব্যাগ হারিয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু উচ্ছৃখল যুবক ডিসি পার্কের গেট ভেঙে ভেতরে লাঠি নিয়ে ঢুকে দোকান ভাঙচুর করছে। হামলায় অন্তত ৩০ দর্শনার্থী আহত হয়েছেন।

ট্রাকচালক আবদুল করিম বলেন, পার্কিংয়ের বাইরে সড়কের ওপর গাড়ি দাঁড়ালে স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চালকদের মারধর করেন। পরে অন্য চালক ও স্থানীয়রা পার্কের ভেতর ঢুকে ভাঙচুর চালান।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাইম মুবার লরি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়েরের দাবি, রাস্তায় গাড়ি দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ডিসি পার্কে থাকা লোকজন চালকদের ওপর হামলা চালান। এতে ৬০-৭০ জন চালক আহত হন। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বন্দর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডিসি পার্কের সামনে পার্কিংয়ে থাকা লোকজন এ হামলা চালিয়েছে। 

তবে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবি, ডিসি পার্ক সংলগ্ন রাস্তায় ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়, যা সহিংস রূপ নেয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো.

সোহেল বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। 

সীতাকুণ্ডের ইউএনও কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ডিসি পার্ক সংলগ্ন রাস্তায় ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সহিংসতা পার্শ্ববর্তী ডিসি পার্কে ছড়িয়ে পড়ে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ল উৎসব চ লকদ র র কর ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরায় বইমেলায় পোড়ানো হলো উদীচীর স্টলের ব্যানার

সাতক্ষীরায় তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী একুশে বইমেলার উদীচীর স্টলের ব্যানার খুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে এক ব্যক্তি ব্যানারটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। আজ বেলা ১১টায় শহীদ আবদুল রাজ্জাক পার্কে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ একুশের বইমেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল, এনডিসি পলাশ আহমেদ, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. জাহারুল ইসলাম, সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকর্তা ফাইজা হোসেন প্রমুখ। বিকেলে মেলায় সাতক্ষীরা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উদীচীকে স্টল দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্যসচিব নাজমুল হোসেন বলেন, দ্বিতীয়বার দেশ স্বাধীন হওয়ার একমাত্র বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী দেশে অরাজকতা পরিস্থিতির সৃষ্টি করার জন্য চেষ্টা করেছিল। সেই উদীচীর স্টল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেন এটা হয়েছে, কিসের জন্য হয়েছে, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখেছি, ৫ আগস্টের পর থেকে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে যতগুলো প্রোগ্রাম বা মিটিং হয়েছে, কোনো না কোনোভাবে ফ্যাসিস্টদের দোসর কিংবা তার সংগঠনগুলোর পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছে। জেলা প্রশাসক কীভাবে তাঁর দায়িত্বের জায়গা থেকে এ রকম একটা কাজ করতে পারেন?’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে উদীচী স্টলের পার্শ্ববর্তী ম্যানগ্রোভ প্রকাশনীতে থাকা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমানের লেখা ‘জীবন ও ঐতিহ্য’ বইটি সরিয়ে ফেলতে বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। ম্যানগ্রোভ প্রকাশনীর লোকজন বইটি সরিয়ে ফেলেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ডেকোরেটরের লোকজন এসে উদীচীর স্টলের ব্যানারটি নামিয়ে ফেলেন। পরে এক ব্যক্তি প্রকাশ্যে সেটিতে আগুন দেন।

শেখ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে ও তাঁদের দেওয়া ব্যানার টানিয়ে স্টল চালু করা হয়েছিল। হঠাৎ ব্যানার খুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান গ্রন্থাগারের ২০টি বই তাঁর স্টলে ছিল, সেগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা নিয়ে গেছেন।

তবে আরাফাত হোসেন দাবি করেন, তাঁরা ব্যানার খোলেননি কিংবা পোড়াননি। ক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি এটি পুড়িয়েছেন। তাঁরা শুধু জেলা প্রশাসকের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন।

জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, তাঁর কাছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রণি (নাজমুল হোসেন) ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন বিষয়টি দেখবেন। একজন এডিসিকে গিয়ে দেখতে বলেছেন। এর আগেই ব্যানার পুড়িয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুরু হচ্ছে আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসব, দেখা যাবে যেসব সিনেমা
  • সাতক্ষীরায় হয়ে গেল স্টেম ফেস্ট
  • প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতে বসন্ত উৎসব উদযাপন
  • বাহারি পাহাড়ি পিঠা সাজিয়ে বসেন শিক্ষার্থী
  • বসন্ত উৎসবে রঙিন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
  • সিরিয়ার শরণার্থীর গল্প নিয়ে শুরু হচ্ছে বার্লিন উৎসব
  • আয়নাঘর ও জুলাই মাসের নৃশংসতা আন্তর্জাতিকভাবে নথিভুক্ত: আসিফ
  • ‘কোনোটাই অন্তরঙ্গ দৃশ্য না, সেভাবেই শিল্পীদের প্রস্তুত করি’
  • ঢাকায় আজ জেমসের কনসার্ট, সবার জন্য উন্মুক্ত
  • সাতক্ষীরায় বইমেলায় পোড়ানো হলো উদীচীর স্টলের ব্যানার