বান্দরবানের রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মংশৈপ্রু পাড়ায় একটি বৌদ্ধবিহার ও শিশুশিক্ষাকেন্দ্র আগুনে পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টার দিকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ওই বিহার ও শিশুশিক্ষাকেন্দ্র কাঠ ও বাঁশের বেড়া দিয়ে নির্মিত হওয়ার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলেও বিহারে থাকা ১৮টি বুদ্ধমূর্তি এবং ৮টি পিতলের ঘণ্টাসহ কিছু ধর্মীয় সরঞ্জাম উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

মংশৈপ্রু পাড়া রুমা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। এলাকাটিতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়ার মতো কোনো সড়ক নেই। আগুন লাগার পর পাড়ার বাসিন্দারা পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। বিহারটি পাড়া থেকে কিছুটা দূরে হওয়ায় পাড়ার ঘরবাড়ির কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

মংশৈখ্যয় মারমা নামের পাড়ার এক বাসিন্দা প্রথম আলোকে জানান, একে তো কাঠ-বাঁশে নির্মিত কাঠামো, তার ওপর বাতাস ছিল অনেক বেশি। যার কারণে পাড়াবাসী চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। তবে ১৮টি বুদ্ধমূর্তি এবং বেশ কিছু ধর্মীয় সরঞ্জাম উদ্ধার করতে পেরেছে। তিনি আরও জানান, বিহারের পাশে অবস্থিত শিশুশিক্ষাকেন্দ্রটি ইউনিসেফের অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পরিচালনা করে। পাড়ার ৩০টি পরিবারের শিশুরা এই শিশুশিক্ষাকেন্দ্রে প্রাক-প্রাথমিকের পড়াশোনা করে আসছে। বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য চাইখেউ মারমা বলেন, আগুনে কয়েক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বিহারাধ্যক্ষ ইন্দ্রাবংশ ভিক্ষু প্রথম আলোকে জানান, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন লাগার সময় বিহারের শ্রমণ ও অন্যরা রান্নাঘরে কাজ করছিলেন। আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও কোনো কাজ হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)  বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।” 

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/চন্দন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ