আরপিসিএল-নরিনকোতে চাকরি, মূল বেতন ৯১ হাজারসহ আছে নানা ভাতা
Published: 5th, February 2025 GMT
বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল)-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড (আরএনপিএল) জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এই কোম্পানিতে ম্যানেজার (সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি) পদে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত ফরম পূরণ করে সরাসরি, ডাকযোগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।
পদের নাম: ম্যানেজার (সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি)পদসংখ্যা: ১
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেকোনো বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। গ্রেডিং সিস্টেমে পাসের ক্ষেত্রে সিজিপিএ-৫-এর স্কেলে ৩.
বয়স: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে সর্বোচ্চ ৫৫ বছর
কর্মস্থল: কলাপাড়া, পটুয়াখালী
বেতন-ভাতা: মাসিক মূল বেতন ৯১,০০০ টাকা। এ ছাড়া বাসাভাড়া ভাতা, প্রকল্প ভাতা, বছরে দুটি উৎসব বোনাস, পরিবহন ভাতা, মেডিকেল ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, গোষ্ঠী বিমাসহ প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আছে।
আবেদন যেভাবেআগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ করে কভার লেটারসহ সিভি সরাসরি, ডাকযোগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। নির্ধারিত আবেদন ফরম এই লিংকে পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চাকরি, পদ ১৪২৫ ঘণ্টা আগেআবেদন ফিআরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেডের অনুকূলে আবেদন ফি বাবদ ৫০০ টাকা পে-অর্ডার করে রসিদ আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।
আবেদনপত্র পাঠানোর ঠিকানা: ম্যানেজিং ডিরেক্টর, আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড, এশিয়ান টাওয়ার (লেভেল-১০), বাসা-৫২, রোড # ২১, নিকুঞ্জ-২, ঢাকা-১২১২।
আবেদনের শেষ সময়: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫।
আরও পড়ুনযমুনা অয়েল কোম্পানিতে উচ্চ বেতনে চাকরি, নেবে ২৩ ক্যাটাগরির পদে৩০ জানুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন
সরকারি নথিপত্রে যেকোনো ঐতিহাসিক ঘটনার ভুল কিংবা মিথ্যা তথ্যের ইচ্ছাকৃত অন্তর্ভুক্তি সন্দেহাতীতভাবে ইতিহাস বিকৃতির সবচেয়ে খারাপ ধাপ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারগুলোর প্রায় প্রত্যেকে এই গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি করা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রাজাকারদের, আর রাজাকারের তালিকায় সুবিদিত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের অন্তর্ভুক্তি দেখা গেছে। কিন্তু হাজারো তরুণের রক্তস্নাত জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেওয়া অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে, তা অকল্পনীয় ছিল।
কিন্তু বাস্তবতা দেখিয়েছে, আগের সেই রেশ থামেনি। দেখা যাচ্ছে, সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শহীদদের যে তালিকা করেছে, তাতে এমন অর্ধশতাধিক লোকের নাম এসেছে, যাঁরা জুলাই শহীদ নন।
জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে: শুধু রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী অথবা আওয়ামী শাসক দলের লোকদের হাতে নিহত ব্যক্তিরাই জুলাই শহীদ বলে গণ্য হবেন। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, সরকারের তৈরি করা জুলাই শহীদদের তালিকায় কমপক্ষে ৫২ জনের নাম আছে, যাঁরা জমিসংক্রান্ত বিরোধ বা অন্য কারণে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন কিংবা নানা ঘটনা-দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ছাড়া তালিকায় তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন ছাত্রলীগ নেতা আছেন। এমনকি তালিকায় এমন একজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যিনি প্রতিবাদীদের ওপর হামলায় যুক্ত ছিলেন।
প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে এককালীন মোট ৩০ লাখ টাকা দেবে সরকার। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরে দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক শহীদ পরিবার মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছে। ঢাকায় তাদের ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।
জনমানসের যৌক্তিক ধারণা, এই অর্থনৈতিক সুবিধার প্রলোভন তালিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় প্রতারণা, শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং অপকৌশলের সুযোগ তৈরি করেছে। শুধু জালিয়াতি করে শহীদ দেখিয়ে শুধু সহায়তা নেওয়া নয়; সংশ্লিষ্ট নিহতের ঘটনায় মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার নজিরও মিলেছে।
এই পরিস্থিতি প্রমাণ করছে, তালিকাভুক্তকরণের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক ও আর্থিক স্বার্থ কাজ করে থাকতে পারে। ঘটনাটিকে দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু কর্মকর্তার মিলিত কৌশল এবং সুযোগসন্ধানীদের চক্রান্ত হিসেবে বিবেচনা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় ধরনের ব্যর্থতা। তবে প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি সরকার আমলে নিয়েছে, এ জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাতে চাই।
বহু শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকার এক মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। তাদের মনে রাখতে হবে, শহীদের মর্যাদাকে সরকারি পরিসরে আর্থিক প্রলোভন, সংকীর্ণ রাজনৈতিক সুবিধা বা স্বার্থপর উদ্দেশ্যে বিকৃত করা হলে সেটি ইতিহাস, নৈতিকতা ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব লঙ্ঘনের অমার্জনীয় অন্যায় হয়ে ওঠে।
এ অন্যায় থেকে বাঁচতে ও মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনে অবিলম্বে বিতর্কিত সব নামের সব সরকারি সুবিধা অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে। স্বাধীন ও অরাজনৈতিক কমিটি গঠন করে প্রতিটি নামের পুনঃ যাচাই নিশ্চিত করা জরুরি। বাদ পড়া শহীদদের নামও তালিকায় যুক্ত করতে হবে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে যাদের গাফিলতি বা দুর্নীতির কারণে এই অনিয়ম হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক অমর মাইলফলক। এর শহীদদের তালিকায় নকল বা অপ্রাসঙ্গিক নাম সংযোজন করা হলে ‘বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা’ সব ‘ধরার ধুলায় হবে হারা’। সরকারকে এ সত্য উপলব্ধি করতে হবে।
আশার কথা হলো, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কথা ও কাজের সম্মিলিত প্রয়াস আমরা দেখব, সেটিই কাম্য।