বল পায়ে এখনও তাঁর গতি অন্য অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। এখনও যখন সবাইকে ছাপিয়ে ডি বক্সে লাফিয়ে উঠে গোল করেন, মুগ্ধ হয়ে থাকেন সবাই। বিজ্ঞাপনের মডেলিংয়ে এখনও তাঁর সিক্সপ্যাক বডির আকর্ষণ বাজার কাঁপিয়ে দেয়। সেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আজ জন্মদিন, পা রাখছেন চল্লিশে। এখনও তিনি স্বপ্ন দেখেন, নতুন নতুন মাইলফলক স্পর্শ করার। ইচ্ছাপূরণের তাড়নায় এখনও টগবগে তরুণ তিনি।
‘আমি যদি ৯২০-৯২৫টি গোল করে ক্যারিয়ার শেষ করি.
হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করা থেকে এখনও ৭৭ গোল দূরে রোনালদো। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে (এসিএল) আরব আমিরাতের ক্লাব আল ওয়াসলকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে রোনালদোর সৌদি ক্লাব আল নাসর, যা ছিল রোনালদোর ক্লাব ক্যারিয়ারে ৭০০তম জয়। যার মধ্যে স্পোর্টিংয়ের হয়ে জয় ১৩টি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দুই দফায় জয় মোট ২১৪টি, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৩১৫টি, জুভেন্টাসের হয়ে ৯২টি এবং আল নাসরের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬৬টি। যেখানে মেসির ক্লাব ক্যারিয়ারে জয় ৬১৩টি। তবে মেসি যেখানে ম্যাচ খেলেছেন ৭৪৪, রোনালদোর সংখ্যা সেখানে হাজারের বেশি। তুলনাটা তাদের এসেই যায়।
রোনালদোকে ওই স্প্যানিশ সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছিলেন, মেসির খেলা আমেরিকার মেজর লিগ সকারের মান কি সৌদি প্রো লিগের চেয়ে খারাপ? উত্তরে রোনালদো– ‘অ্যারাবিয়ান লিগের চেয়ে খারাপ এমএলএস, যদিও মানুষ এসব জানে না।’
লম্বা এই সাক্ষাৎকারের পুরোটা প্রকাশ হয়নি এখনও। তবে প্রোমোর কিছু অংশে মেসির সঙ্গে তাঁর পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে কথা বলেছেন রোনালদো। জানিয়েছেন, তাদের দু’জনের সম্পর্কে মানুষ যা ভাবে, আসলে তা নয়। ‘মেসি? আমাদের মধ্যে সুস্থ একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। আমরা ১৫টি বছর ব্যালন ডি’অরের মঞ্চ একসঙ্গে ভাগাভাগি করেছিলাম। আমার মনে আছে, ওই অনুষ্ঠানে সঞ্চালক যখন ইংরেজিতে কিছু বলত, আমি তা তাকে (মেসিকে) অনুবাদ করে শোনাতাম। সেটা মজার একটি ব্যাপার ছিল, সে আমাকে সব সময় ভালো চোখে দেখেছে। অবশ্যই সে তার ক্লাবের হয়ে লড়েছে, আমি আমার ক্লাবের হয়ে। সে তার দেশের জন্য সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, আমিও তাই করেছি। আমার মনে হয়, দুইজনের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা দুইজনের জন্য আরও ভালো খেলতে সাহায্য করেছে। আমার মনে হয়, সে সব বছর সবকিছু খেলতে চাইত, গোল করতে চাইত। আমিও ঠিক তাই চাইতাম। আমি যেমন ক্যাম্প ন্যুতে গিয়ে খেলতে ভীষণ পছন্দ করতাম, সেখানে আমাকে দুয়ো শুনতে হতো, দর্শকরা আমাকে অপমান করতে চাইত; তাও সেটা আমি ভালোবাসতাম। আসলে আমার হৃদয়ে এখনও মাদ্রিদ রয়ে গেছে। এটা এমন একটা দল, যেখানে আমি সবচেয়ে সুখি ছিলাম। সেখানে আমার সুন্দর সব স্মৃতি রয়েছে, কিছু মাইলফলক রয়েছে। সে কারণেই সেখানকার মানুষ আমাকে ভুলতে পারে না। কখনও ভুলতেও পারবে না।’ জন্মদিনের আগে পুরোনো সব স্মৃতির ঝাঁপি যেন খুলে দিয়েছিলেন রোনালদো।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ