সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ
Published: 5th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম-৬ রাউজান আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে ১৬ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ফজলে করিম চৌধুরী ইতিমধ্যে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার আছেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ছাড়া আজ আরও একজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। তবে আসামি পালিয়ে যেতে পারেন, সেই কারণে তাঁর নাম-পরিচয় জানানো হয়নি।
রাষ্ট্রপক্ষে আজ শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন, বি এম সুলতান মাহমুদ ও আবদুল্লাহ আল নোমান।
পরে সাংবাদিকদের গাজী মনোয়ার হোসেন বলেন, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও অন্যান্য এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন ও অন্যান্য—এই দুটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তদন্তকালে যেকোনো স্থান তল্লাশি ও যেকোনো বস্তু জব্দ করতে পারবেন, এমন পৃথক দুটি আবেদন করা হয়েছিল। সেটিও ট্রাইব্যুনাল মঞ্জুর করেছেন। আরেকটি আবেদন করা হয়েছিল, তা হলো তদন্তকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনো বস্তু জব্দ করলে সেটির জেনুইনিটি (সত্যতা) পরীক্ষা করাতে পারেন। সেই আবেদনও ট্রাইব্যুনাল মঞ্জুর করেছেন।
আরও পড়ুনসাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিমের বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪এক প্রশ্নের জবাবে গাজী মনোয়ার হোসেন বলেন, ট্রাইব্যুনালের ১৯৭৩ সালের আইন ২০০৯ সালে সংশোধন করা হয়েছিল। সেই সংশোধনে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল যে তিনি যেকোনো জায়গায় যেকোনো কিছু তদন্ত করতে পারবেন। কিন্তু ২০২৪ সালের সংশোধনীতে তল্লাশি ও জব্দের ব্যাপারে আদালতের অনুমতি নেওয়ার একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে প্রতিটি মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আলাদাভাবে অনুমতি নেওয়া লাগছে।
আরও পড়ুনআরও তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিমকে১০ ডিসেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ