আদালতের নির্দেশে ছয় মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আরাফাতের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করতে গিয়ে শহীদের কবর জিয়ারত করে ফিরে এসেছে প্রশাসন। মায়ের কাকুতি মিনতির বাধায় লাশ উত্তোলন করেননি তারা।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মহারাজপুর ইউনিয়নের ছোট বনগ্রামে পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করতে যায় প্রশাসন।

এ ঘটনায় শহীদের পরিবার ও স্থানীয়দের প্রশংসায় ভাসছেন কর্তব্যরত প্রসাশনের কর্মকর্তারা। গোপালগঞ্জ জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রবির বিশ্বাসের নেতৃত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (পিবিআই) কুদরত ই খুদা, মুকসুদপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা কামাল, ইন্সপেক্টর (পিবিআই) গোবিন্দ লাল, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রবির বিশ্বাস জানান, আদালতের নির্দেশে সঙ্গীয় পিবিআই ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার, মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নিয়ে শহীদ আরাফাতের মরদেহ উত্তোলন করতে গেলে তার মায়ের আর্তনাদে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ উত্তোলন বন্ধ করা হয়। পরে শহীদ আরাফাতের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে ঘটনাস্থল ত্যাগ করা হয়।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয় তিনি। আরাফাতের বাবা স্বপন মুন্সি পেশায় দিনমজুর। মা মায়া বেগম কাজ করেন একটি পোশাক কারখানায়। তারা ঢাকার আশুলিয়ায় থাকেন। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত সেখানেই বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়তেন।

ঢাকা/বাদল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ