ঢাকায় বায়ুদূষণ কমার লক্ষণ নেই, জানুয়ারিতে ভয়াবহ
Published: 7th, February 2025 GMT
শুকনা মৌসুমে রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ প্রতিবছর বেশি থাকে; কিন্তু এবারের শুকনা মৌসুমে বায়ুদূষণের রেকর্ড ভাঙছে। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস শুকনা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। নভেম্বরে ঢাকার বায়ুর মান খারাপ হতে শুরু করে। সর্বশেষ নভেম্বরে বায়ুদূষণ ছিল আগের আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ডিসেম্বরও বায়ুদূষণ ছিল আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর সদ্য শেষ হওয়া জানুয়ারি মাসে বায়ুদূষণ আগের আট বছরকে ছাড়িয়ে গেছে।
পরিবেশবিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ওই এক দিন নয়, পুরো জানুয়ারিতে এক দিনও নির্মল বায়ু পাননি রাজধানীবাসী।জানুয়ারি মাসের দূষণের এ পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরেছে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাওয়া গত ৯ বছরের (২০১৭ থেকে ২০২৫) বায়ুমান সূচক বা একিউআইয়ের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছে ক্যাপস। প্রতিষ্ঠানটি গতকাল বৃহস্পতিবার এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে।
জানুয়ারি মাসে প্রায় প্রতিদিন বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান বিশ্বের নগরগুলোর মধ্যে এক থেকে পাঁচের মধ্যেই ছিল। চরম দূষণ এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী; কিন্তু দূষণের উৎসগুলো নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ে না। খোদ পরিবেশ অধিদপ্তরও বলছে, বায়ুদূষণ কমানো সময়সাপেক্ষ বিষয়। দ্রুত এটি কমছে না।
ভয়ানক দূষণ জানুয়ারিতেবায়ুর মান ৩০০ পার হলেই তাকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলা হয়। অর্থাৎ যেসব স্থানে বায়ুর মান এমন, সেখানে দূষণ পরিস্থিতি ভয়ানক রকম খারাপ। গত ২২ জানুয়ারি সকালে আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার সার্বিক বায়ুর মান ছিল ৫১৮। আর সারা দিনে বায়ুর মান ছিল ৬২২। সেদিনের বাতাসে যে ভয়াবহ দূষণ, তা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিশেষজ্ঞরা। শুধু ওই এক দিন নয়, পুরো জানুয়ারিতে এক দিনও নির্মল বায়ু পাননি রাজধানীবাসী।
ক্যাপসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসের বায়ুদূষণ আগের আট বছরের জানুয়ারি মাসের গড় মানের তুলনায় শতকরা ২৪ দশমিক ৫২ ভাগ বেশি ছিল। আট বছরের (২০১৭-২৪) জানুয়ারি মাসের গড় দূষণের মান ছিল ২৫৫ দশমিক ৪৮। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তা ছিল ৩১৮। আগের বছরের জানুয়ারিতে এটি ছিল ৩০২।
নভেম্বর থেকে মার্চ মাস শুকনা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। নভেম্বরে ঢাকার বায়ুর মান খারাপ হতে শুরু করে। সর্বশেষ নভেম্বরে বায়ুদূষণ ছিল আগের আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে যথাক্রমে ১০ দশমিক ৩৭ এবং ৩০ দশমিক ৫৪ শতাংশ বায়ুদূষণ বৃদ্ধি ছিল আগের বছরগুলোর তুলনায়।
ক্যাপসের চেয়ারম্যান আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকার বায়ুর মানের ক্রমাগত অবনমন দেখছি। আর এবারের শুকনা মৌসুমে দূষণের রেকর্ড হচ্ছে। গত নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি—প্রতিটি মাসেই আগের আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দূষণ দেখা গেছে। দূষণ থেকে নগরবাসীর কোনো মুক্তির দিশা দেখছি না।’
বায়ুর মান শূন্য থেকে ৫০ থাকলে ‘ভালো’ বলা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে ‘গ্রহণযোগ্য’। ১০১ থেকে ১৫০ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ক্ষতিকর’, ১৫১ থেকে ২০০ ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০০–এর বেশি হলে তা হয় ‘দুর্যোগপূর্ণ’।
ক্যাপসের তথ্য অনুযায়ী, এবারে জানুয়ারি মাসের ৩১ দিনের মধ্যে ১৬ দিনই ছিল ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ১৫ দিন ছিল ‘অতি অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ণ বায়ুমান।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এক দ ন পর ব শ দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সেরা
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) অনুষ্ঠিত হলো আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস কেস প্রতিযোগিতা ‘টেক্সবিজ ২০২৫’-এর গ্র্যান্ড ফাইনাল। এতে চ্যাম্পিয়ন হয় ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি টিম ‘কেইস ক্লোজড ক্রু’। সম্প্রতি বুটেক্স বিজনেস ক্লাবের আয়োজনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় এ চূড়ান্ত পর্ব, যেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী, ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। প্রতিযোগিতায় দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোট ২০০টি দল রেজিস্ট্রেশন করে। এর মধ্যে ১৭টি দল সেমিফাইনাল এবং ৬টি দল চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। চূড়ান্ত পর্বে ৩টি দলকে চ্যাম্পিয়ন, ১ম ও ২য় রানারআপ ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া চূড়ান্ত পর্বের আরও একটি দলকে ইমার্জিং টিম ঘোষণা করা হয়। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় সেমিফাইনাল রাউন্ড। বেলা ৩টা থেকে পোস্টার প্রেজেন্টেশন ও আর্টিকেল রাইটিং সেগমেন্ট এবং কেস কম্পিটিশনের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। কেস কম্পিটিশনে ১ম রানারআপ টিম ট্রেইলব্লেজারস এবং ২য় রানারআপ হয় টিম ঝালমুড়ি। এ ছাড়া আর্টিকেল রাইটিং বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুয়েটের রোয়াইদা বিনতে আলি এবং পোস্টার প্রেজেন্টেশন বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বুটেক্সের ‘টিম ফিউশন’। প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. জুলহাস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। চূড়ান্ত পর্বে বিচারক ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার আ স ম হাফিজুর রহমান নিক্সন, শেখ মামুন ফেরদৌস, সুবাহ আফরিন এবং ওমর ফারহান খান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বুটেক্স বিজনেস ক্লাবের সভাপতি আনান সরকার ফিজা বলেন, ‘বুটেক্স বিজনেস ক্লাব সবসময় শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে। দীর্ঘ ছয় বছর পর আয়োজিত টেক্সবিজের এবারের সংস্করণও তার ব্যতিক্রম নয়। আমার বিশ্বাস আজকের ইভেন্টে শিক্ষার্থীরা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটাতে পেরেছে।’ সাধারণ সম্পাদক সোহানুর রহমান বলেন, ‘টেক্সবিজ শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি ছিল শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, দলগত কাজ এবং বাস্তব সমস্যা সমাধানের দক্ষতা যাচাইয়ের এক চমৎকার প্ল্যাটফর্ম। আমরা বিশ্বাস করি, এ আয়োজনের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে, আত্মবিশ্বাস ও বিশ্লেষণী ক্ষমতা আরও শানিত করতে পেরেছে। ভবিষ্যতেও আমরা চাই এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাস্তব জগতের চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠুক।’ উল্লেখ্য, দীর্ঘ ছয় বছর পর বুটেক্স বিজনেস ক্লাব কর্তৃক টেক্সবিজ-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।v