সয়াবিনের সংকট তীব্র, কমেছে চালের দাম
Published: 7th, February 2025 GMT
সয়াবিন তেলের দাম দফায় দফায় বাড়িয়েও ক্ষান্ত হয়নি সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো। রমজানকে সামনে রেখে আরেক দফায় দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে তারা। তাই, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ না করে তীব্র সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতাদের।
এদিকে, চাল আমদানির খবরে বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে দাম কিছুটা কমেছে। জাতভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ১ থেকে ৪ টাকা কমেছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নিউ মার্কেট ও কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম। তাই, অনেক ক্রেতা তেল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
এখন বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম ১৫৭ টাকা। বোতলজাত দুই লিটার সয়াবিন তেল ৩৫০ টাকায় এবং পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ সপ্তাহে প্রতি কেজি মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, মাঝারি চাল ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা, সরু চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা এবং ব্রি-২৯ চাল ৫৮ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কমছে আলু ও পেঁয়াজসহ সবজির দাম:
এখন বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির কেজি ৫০ টাকার মধ্যে। রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন মানভেদে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, সিম ২৫ টাকা, মুলা ২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, দেশি শসা ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, প্রতিটি পিস লাউ ৪০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা এবং বড় সাইজের ফুলকপির জোড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরবরাহ ভালো থাকায় কমেছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। প্রতি কেজি রসুন ২৪০ টাকা ও দেশি আদা ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মাছের সরবরাহও ভালো। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে দাম কিছুটা কমেছে। তবে, নদীর মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুইয়ের কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের পাঙাস ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কৈ ১৫০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়।
ডিমের দামও কমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।
ব্রয়লার মুরগির দাম স্বাভাবিক আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।
রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা কাকলী বেগম রাইজিংবিডি বলেছেন, “সবজির দাম কমছে। আমরা চাহিদামতো কিনতে পারছি। তবে, মুদিপণ্যের দাম আগের মতো। তেলের দাম কমলে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের জন্য উপকার হত।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মনোয়ারা জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী রাসেল শিকদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাজারে বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই। আমরা অর্ডার দিয়ে ঠিকমতো তেল পাচ্ছি না। ডিলারদের ১০ কার্টন তেল অর্ডার দিলে ২ কার্টনও পাওয়া যায় না। ফলে, অনেক ক্রেতা সয়াবিন তেল কিনতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। সামনে রমজানকে কেন্দ্র করে আরেক দফায় সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা আছে।”
ঢাকা/রায়হান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০০ ট ক সরবর হ ৩০ ট ক ৪০ ট ক ৫০ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।
ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।
ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।
কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’
ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টশুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।
জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং