অর্থনীতি ভালো না হলে দেশ স্থিতিশীল হবে না
Published: 8th, February 2025 GMT
আমার সব সময় মনে হয়, সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত ব্যবসা-বাণিজ্য। কিন্তু সব সরকারই এই জায়গা থেকে কমবেশি দূরে সরে যায়। কিন্তু মনে রাখা উচিত, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো না হলে অর্থনীতি ভালো হবে না; অর্থনীতি ভালো না হলে কর্মসংস্থান হবে না। সেটা না হলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না।
ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমরা ক্রমেই বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছি। প্রথমত, বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে যাচ্ছে। ঋণের সুদহার যদি ১৬ শতাংশে উঠে যায়, তাহলে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে। দ্বিতীয়ত, ছয় মাস আগের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে ঠিক, কিন্তু তা এখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে আসেনি। সমস্যা আছে। একদিকে উচ্চ সুদ, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন অনিশ্চয়তা, এ বাস্তবতায় দেশে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে। নতুন করে কেউ বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। সেই সঙ্গে যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন, তাঁরাও বিনিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তায় থাকবেন।
এদিকে গতকাল শুক্রবার ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া নীতি সুদহার হ্রাস করেছে। সেখানে এখন ঋণের সুদহার ৭ থেকে ৮ শতাংশ। এ বাস্তবতায় আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আরও মার খাচ্ছে। অথচ এখন দরকার ছিল, আমাদের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
সরকারের কাজে একধরনের দীর্ঘসূত্রতা আছে। তাদের কথা শুনে মনে হয়, অনেক সময় যেন পড়ে আছে। বেসরকারি খাতে যে সমস্যার সমাধানে হয়তো এক ঘণ্টা সময় লাগে, সরকারি পর্যায়ে সেই সমস্যার সমাধানে অনেক সময় লেগে যায়। মনে রাখতে হবে, সময় আছে, সরকার এটা মনে করলেও দেশের তরুণ জনগোষ্ঠী কিন্তু এত সময় না–ও দিতে পারে। তাঁরা ভালো চাকরি চান, উন্নত জীবন চান; তাঁদের সেই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না।
এই যখন বাস্তবতা, তখন সরকার হঠাৎ বিভিন্ন পণ্যে ভ্যাট বৃদ্ধি করল। এমনকি খাদ্যপণ্যেও। বিশ্বের কোথাও খাদ্যপণ্যে সম্পূরক শুল্ক নেই, কিন্তু বাংলাদেশে আছে। বিস্কুটের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হলো। কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য ও বেভারেজে ভ্যাট নেই। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে ২০ থেকে ২৫ টাকার পণ্যে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হচ্ছে, এ বাস্তবতায় কীভাবে ব্যবসা হবে। কোম্পানিগুলো কত রাখবে, সরকারকেই–বা কী রাজস্ব দেবে।
আমি মনে করি, সরকারের উচিত করভার হ্রাস করে পণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা। সেটা হলে অর্থনীতিতে গতি আসবে। সরকারও রাজস্ব পাবে, কিন্তু তা না করে সরকার উল্টো ভ্যাট বৃদ্ধি করল।
অনেক কিছু সম্পর্কেই আমরা টুকরা টুকরা খবর পাই, যেমন আইএমএফের পরামর্শে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকেও পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেওয়া হয় না। সেটা হলে আমরা সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারি। অথচ আমাদের জানানো হলে আমরাও সরকারকে সহায়তা করতে পারতাম।
আহসান খান চৌধুরী: চেয়ারম্যান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব স তবত সরক র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’