শ্রীপুরে কথিত সাধক মনির শাহকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ
Published: 9th, February 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় কথিত সাধক মনির শাহ ওরফে জয়গুরু মনির শাহকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছেন একদল উত্তেজিত লোক। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।
মনির শাহ সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি শ্রীপুরের বারতোপা গ্রামে ফুলানিরসিট এলাকায় বনের জায়গায় হেরা বন পাক দরবার শরিফ নামে আস্তানা গড়ে তোলেন। সেখানে তিনি কয়েক দফা ‘বিশ্ব মানব ধর্ম মেলা’ নামে কিছু ভক্ত নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। তাঁর দরবার শরিফে ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হওয়া কথা ছিল। এর আগে ২০১৭ সালের অক্টোবরে বন বিভাগের করা মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। উচ্ছেদ করা হয়েছিল তাঁর আস্তানা।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য মনির শাহ ও তাঁর আস্তানার বিষয়টি এলাকায় সমালোচিত হচ্ছিল। বনের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা আস্তানাটি বন বিভাগ ভেঙে দেওয়ার পর আবারও সেখানে আস্তানা প্রতিষ্ঠা করেন মনির শাহ। এর প্রতিবাদে আজ শ্রীপুরে ‘ওলামা মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতা’র উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা করার কথা ছিল। সভা শুরুর আগে আজ সকালে মনির শাহ শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় জামিয়া ইসলামিয়া কওমি মাদ্রাসায় যান সমঝোতা করার জন্য। এ সময় তাঁকে দেখে ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কিছু লোক উত্তেজিত হন। তাঁকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে সেখানে আসেন স্থানীয় আলেম-ওলামারা। তাঁরা মারধরের হাত থেকে মনির শাহকে রক্ষা করে পুলিশে খবর দেন। পরে শ্রীপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মনির শাহকে তাঁদের হাতে তুলে দেন।
মাওনা চৌরাস্তার জামিয়া ইসলামিয়া কওমি মাদ্রাসার মুহতামিম জামাল উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেখানে উত্তেজিত জনতা ও তৌহিদি জনতা মনির শাহকে মারধর করার চেষ্টা করেন। আমরা তাঁকে মাদ্রাসার ভেতরে নিয়ে হেফাজত করি। পরে তাঁকে পুলিশি হেফাজতে দেওয়া হয়।’
গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মন র শ হ
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষ, আদেশ ৬ আগস্ট
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর আদেশের জন্য আগামী ৬ আগস্ট তারিখ ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ আজ বুধবার শুনানি শেষে আদেশের এই তারিখ ধার্য করেন।
গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য ১ জুলাই তারিখ ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার শুনানি হয়।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়; পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারীপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন। এ ছাড়া ইন্টারভেনার (ব্যাখ্যাকারী) হিসেবে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর আজ শুনানি শেষ হলো।