দেশে বয়স্ক ভাতা গ্রহণকারীর ৯৮ শতাংশ মনে করেন, এই ভাতা সমাজে তাদের সম্মান বাড়িয়েছে। সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ পাওয়ার হার বেড়েছে ৭৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্ব বেড়েছে ৪১ দশমিক ১ শতাংশ প্রবীণের। জিটুপি (গভর্নমেন্ট টু পারসন) প্রক্রিয়ায় ভাতা বিতরণকে ইতিবাচক মনে করছেন তাদের ৯০ শতাংশ। 
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হিসেবে ‘বয়স্ক ভাতা ‘জিটুপি পেমেন্ট ব্যবস্থায় বিতরণ: একটি মূল্যায়নধর্মী সমীক্ষা’ শিরোনামে চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচটি জেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও দুটি ওয়ার্ডে পরিচালিত জরিপে এসব তথ্য জানা গেছে। জরিপে ৩৫০ জন বয়স্ক ভাতাভোগীর কাছ থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এটি পরিচালনা করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়। সারাদেশে বয়স্ক ভাতা নিয়ে গবেষণার অংশ হিসেবে এই জরিপ করা হয়। পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক, বর্তমানে জাতীয় সমাজসেবা একাডেমির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহী নেওয়াজ। আট ক্যাটেগরিতে অর্ধশত প্রশ্নের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সম্প্রতি চূড়ান্ত প্রতিবেদন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। 
জরিপের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বয়স্ক ভাতা ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবীণের আংশিক মৌলিক চাহিদা পূরণে সক্ষম। ভাতা পাওয়ায় ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবীণের পারিবারিক সম্মান, তাদের সেবাযত্ন বেড়েছে। এই ভাতা স্বাস্থ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে সক্ষম– বলেছেন ৮৪ শতাংশ। উত্তরদাতাদের মধ্যে স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ, মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ালেখা সম্পন্ন করেছেন ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, প্রাথমিক পর্যায়ে ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ভাতা গ্রহণকারীর ৪১ দশমিক ১৪ শতাংশ প্রবীণ তাদের পরিবারের খরচ চালান। ৪৪ শতাংশ সন্তানের ওপর নির্ভরশীল। ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। জিটুপি পেমেন্ট ব্যবস্থাকে ৯৬ দশমিক ৭১ শতাংশ প্রবীণ ইতিবাচক ও সহজ মনে করেন। ভাতা গ্রহণে ৬২ শতাংশ প্রবীণ নিজস্ব মোবাইল ফোনসেট ব্যবহার করেন, ৩৭ শতাংশ ব্যবহার করেন অন্যেরটা। এই ভাতা বিতরণের প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রশ্ন উঠছে। দেশে বিভাগভিত্তিক বয়স্ক ভাতা বিতরণ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ১০ লাখ ৫৩ হাজার ৮৬২ জন প্রবীণ বয়স্ক ভাতা গ্রহণ করেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ লাখ ৮২ হাজার ৫৭১ জন, খুলনায় ৭ লাখ ২০ হাজার ৮২৪, রাজশাহীতে ৭ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৪, রংপুরে ৮ লাখ ৫১ হাজার ৯০০, বরিশালে ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮৬১, ময়মনসিংহে ৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮৪৩ এবং সিলেটে ৩ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৫ জন বয়স্ক ভাতা গ্রহণ করেন। মাসে একজনকে ৬০০ টাকা দেওয়া হয়। 
জরিপ প্রতিবেদনে বয়স্ক ভাতার পরিমাণ বাড়ানো, বিনোদন চাহিদা পূরণে উৎসবে বিশেষ ভাতা প্রদানসহ নানা সুপারিশ করা হয়েছে। 
এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ শাহী নেওয়াজ সমকালকে বলেন, ‘প্রবীণদের বাস্তব অবস্থা ও সঠিকভাবে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরতে গ্রাম পর্যায়ে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এমন জরিপ দেশে এটি প্রথম।  
সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (সামাজিক নিরাপত্তা) মোশাররফ হোসেন বলেন, ৯০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রবীণদের আলাদাভাবে আর্থিক সুবিধা দেওয়া যায় কিনা, সেটি বিবেচনা করা উচিত। গবেষণাকাজে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা ঢাবি অধ্যাপক ড.

হাফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘বয়স্ক ভাতা পাওয়ায় পরিবারে প্রবীণদের মূল্যায়ন বেড়েছে। এটি মানসিকভাবেও স্বস্তি ফিরিয়ে দিয়েছে।’ 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বয়স ক ভ ত পর চ ল গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ 

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। 

আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। 

‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়। 

পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল। 

ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র‌্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র‌্যাঙ্কিং ৫৫)। র‌্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না। 

প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।

এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ। 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে কর্মীদের জন্য গার্ডিয়ানের ওয়ার্কশপ
  • জেনে নিন, জান্নাতি ২০ সাহাবির নাম
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দিল জাবি
  • অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ 
  • ওয়ালটন হাই-টেক পার্কে ২ দিনব্যাপী অগ্নি নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ কর্মশালা