নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ছয়টি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর প্রাথমিকভাবে বন্ধ ঘোষণার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আটটি স্থলবন্দর কার্যকর বা অকার্যকরের বিষয় যাচাইয়ের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত কমিটি এ সুপারিশ করে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড.

এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে কমিটির পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। এর আগে কমিটি নির্ধারিত স্থলবন্দরগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করেন।  
ওই ছয়টি স্থলবন্দর হলো— নীলফামারীর চিলাহাটি স্থলবন্দর, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর, রাঙ্গামাটির তেগামুগ স্থলবন্দর, দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দর, ময়মনসিংহের কড়ইতলী স্থলবন্দর এবং হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দর।

সভায় নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, “বিগত সরকারের আমলে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠেছে, যা রাষ্ট্রের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনেনি, বরং রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হয়েছে। একটি উপজেলায় অপেক্ষাকৃত কম দূরত্বে দুটি স্থলবন্দরও নির্মাণ করা হয়েছে। দেশের জনগণের উন্নয়নের জন্য যেটি মঙ্গলজনক হবে সে সব স্থলবন্দর সচল রাখা হবে।”

অর্থনৈতিক কার্যক্রম না থাকা এবং রাষ্ট্রের জন্য লাভজনক না হওয়ায় ওই স্থলবন্দরগুলোর কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, এসব স্থলবন্দরের ভারতের অংশে উপযুক্ত কোনো স্থাপনাও গড়ে উঠেনি। তবে বাংলাদেশ অংশে স্থলবন্দরের জন্য বিভিন্ন স্থাপনা বা অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠায় ওই বন্দরগুলোর বিষয়ে অধিকতর যাচাইয়ের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/ এএএম/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।

স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।

অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে