অসহায় গার্দিওলাকে কি নতুন ক্লাসিকোয় আরও ডোবাবেন সন্ত আনচেলত্তি
Published: 11th, February 2025 GMT
একজন ডাগআউটে টর্নেডোর মতো অস্থির হয়ে এদিক-সেদিক ছুটছেন। আঙুলের ইশারায় শিষ্যদের কড়া নির্দেশনা দিচ্ছেন। আবার কিছু একটা মনমতো না হলে মাথা কুটে মরছেন। কখনো কখনো আবেগ সামলাতে না পেরে সাইডলাইনে বসেও পড়ছেন, এমনকি পারলে শুয়েও পড়েন!
বিপরীতে অন্য ডাগআউটের কোচটির মধ্যে কোনো কিছুই নিয়েই যেন কোনো হেলদোল নেই। তিনি যেন শতবর্ষীয় এক সন্ত। মুখে চুইংগাম নিয়ে চোয়ালটাকে অনন্তকাল ধরে নাড়িয়েই চলেছেন। দল গোল খেলেও আবেগে কোনো তারতম্য হয় না, আবার গোল দিলেও ভাবগতিকে কোনো পরিবর্তন আসে না। অদ্ভুত এক নির্লিপ্ততা যেন।
ডাগআউটে দুই কোচের এমন বিপরীতমুখী অবস্থান গত কয়েক বছরে আমাদের সময়ের ক্ল্যাসিক চিত্রগুলোর একটি। সেই দুজন কোচের নাম বোধ হয় আলাদা করে বলে না দিলেও চলে। তা–ও অবশ্য বলে দেওয়া ভালো। অস্থির সেই কোচের নাম পেপ গার্দিওলা আর শান্ত-সুবোধ ‘বালক’টি কার্লো আনচেলত্তি।
সামনের দিনগুলোয় আধুনিক ফুটবলের ধ্রুপদি দ্বৈরথের কথা বললে ম্যানচেস্টার সিটি-রিয়াল মাদ্রিদ কিংবা গার্দিওলা-আনচেলত্তির লেখা গল্পগুলো ওপরের দিকেই থাকবে। বিশেষ করে কয়েক বছর ধরে ইউরোপীয় ফুটবলের রোমাঞ্চের পারদটাকে বেশ ওপরে দিকেই নিয়ে গেছেন তাঁরা। যেখানে মুখোমুখি লড়াইগুলো ফুটবলীয় নন্দনের চিরকালীনতার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। আজ রাতে ইতিহাদে মাঠে নামার আগে দুই দলের লড়াইকে ‘ক্লাসিকো’র মর্যাদা দিচ্ছেন রিয়াল কোচ আনচেলত্তিও। তিনি বলেছেন, ‘এটা এখন ক্লাসিকোর মতোই। কারণ, আমরা দুই দল অনেক দিন ধরে একে অপরের বিপক্ষে খেলছি।’
আরও পড়ুনসেই অর্থের ছায়াতলেই সিটির ভাগ্য বদলাতে চাইছেন গার্দিওলা২৪ জানুয়ারি ২০২৫এবারসহ গত চার মৌসুম ধরে চ্যাম্পিয়নস লিগে মুখোমুখি হয়ে আসছে সিটি-রিয়াল। তবে আগের লড়াইগুলোর সঙ্গে এবারের লড়াইয়ের মৌলিক পার্থক্যও আছে। শেষ তিন বছরের দুবার এই দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল সেমিফাইনালে এবং একবার কোয়ার্টার ফাইনালে। এর মধ্যে ২০২১-২২ এবং ২০২৩-২৪ মৌসুমের দ্বৈরথ অনেক দিন মনে রাখার মতো ছিল। কিন্তু এবার পরিবর্তিত সংস্করণে দুই দল মুখোমুখি হতে যাচ্ছে শেষ ষোলোতে যাওয়ার নকআউট লড়াইয়ে। অর্থাৎ আগেভাগেই বিদায় নিতে হবে দুই পরাশক্তির একটিকে।
রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণভাগের চার খেলোয়াড় (বাঁ থেকে) এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস, বেলিংহাম ও রদ্রিগো.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ই দল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে নতুন করে শুরু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।