রোবট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠছে। নানা কাজের দায়িত্ব নিয়ে রোবট আমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে সহজ করে দিচ্ছে। কিন্তু চীনের একটি কোম্পানি তাদের তৈরি রোবটকে দিয়ে যা করিয়েছে, তা দেখে বিস্ময় আর খুশিতে হাততালি দিয়ে উঠেছেন দর্শকেরা।

চীনের স্প্রিং ফেস্টিভ্যাল (বসন্ত উৎসব) ‘ইউনিট্রি এইচওয়ান’ নামে ১৬টি রোবট নৃত্য শিল্পীদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে সমন্বিত নৃত্য পরিবেশন করছে।

চান্দ্র নববর্ষে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভিতে প্রতিবছর বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ওই অনুষ্ঠান চলে। বিশ্বের যে কয়টি অনুষ্ঠান সবচেয়ে বেশি দর্শক টেলিভিশনের সামনে বসে উপভোগ করেন, তার একটি হচ্ছে চীনের এই বসন্ত উৎসব।

চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে চীনা নববর্ষ উৎসব শুরু হয়েছে। ১৫ দিন ধরে এই উৎসব চলবে। এবারের বসন্ত উৎসব চলাকালে একটি সমন্বিত নৃত্য পরিবেশনায় নৃত্যশিল্পীদের পাশাপাশি মঞ্চে উপস্থিত হয় ১৬টি রোবট। বাজনার তালে তালে লাফিয়ে এবং হাত-পা নেড়ে সেগুলো নাচতে থাকে। রোবটগুলো এত নিখুঁতভাবে নাচছিল যে হঠাৎ করে দেখলে সেগুলোকে মানুষ মনে হবে।

চীনের ঐতিহ্যবাহী ইংকো নাচ নেচেছে রোবটগুলো। এই নাচে বাজনার তালে তালে শরীর নাড়ানোর পাশাপাশি হাতে থাকা বস্তু ঘোরাতে এবং সেগুলো শূন্যে ছুড়ে আবার লুফে নিতে হয়।

মানুষ ও রোবট পাশাপাশি লাইনে দাঁড়িয়ে নৃত্য পরিবেশন করে। ইউনিট্রি রোবোটিকস নামের একটি প্রতিষ্ঠান রোবটগুলো তৈরি করেছে। তারা তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে রোবটের নাচের ভিডিও পোস্ট করেছে।

ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকে অনলাইনে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) এই উত্তরণের প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ আবার বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন।

সমালোচকদের যুক্তি, নাচ একটি সহজাত মানবশিল্পরূপ। প্রযুক্তি যত উন্নতই হোক, নৃত্য পরিবেশনায় কোনো রোবট মানুষের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বসন ত উৎসব

এছাড়াও পড়ুন:

ফসলের ক্ষেতে আশার আলো

বৈশাখ মাস, চারদিকে উৎসবের আমেজ। সেই উৎসবের ঢেউ লেগেছে শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে। নতুন ধান ঘরে তোলার ধুম লেগেছে হাওর অঞ্চলে; বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি এলাকায়। হাওরের পুবালি বাতাসে এখন পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। বৈশাখ এলেই সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে চিরচেনা এ রূপ চোখে পড়ে। ঠা-ঠা রোদ মাথায় নিয়ে ক্ষেতে ধান কাটেন কৃষক। অন্যদিকে চলে মাড়াই। কিষানিরা মনের আনন্দে মাড়াই করা ধান শুকান। বিকেলের শান্ত রোদে শুকনো ধান মাথায় নিয়ে ঘরে ফেরেন।
ধান কাটা উৎসবে শুধু কিষান-কিষানি নন, সব বয়সী মানুষই যোগ দেন। হাওরে এটি এক অনন্য উৎসব। চলে বৈশাখজুড়ে। এ উৎসবের কাছে কাঠফাটা রোদ, ঝড়-বৃষ্টি যেন তুচ্ছ। ধানের সবুজ শীষের রং যখন লালচে হতে শুরু করে, তখন কৃষকের মনের রং বদলায়। চোখ-মুখ খুশিতে ভরে ওঠে। লোকমুখে প্রচলিত– বছরের প্রথম দিনে ঘরে ফসল তুললে সারাবছর অভাব থাকে না। তাই তো হাওরে চলছে পাকা ধান কাটার উৎসব। তবে চলতি মৌসুমে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ধান তলিয়ে যায়। যাতে অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
আনন্দ-বেদনার এ বৈশাখে প্রকৃতি নতুন বিন্যাসে সাজে। বসন্তে প্রকৃতিতে যে রং লাগে, তা পূর্ণতা পায় বৈশাখে। অসীম আকাশে নানা বর্ণের মেঘের আনাগোনা আমাদের মনে সঞ্চারিত করে সঞ্জীবনী মন্ত্র। চোখে প্রশান্তি এনে দেয় সর্ববিস্তৃত প্রকৃতি। এ সময় চারদিকে আগুন ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, জারুল, বাগানবিলাসসহ প্রকৃতিতে রঙের ছড়াছড়ি। দেখা মেলে আম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুলসহ মধুমাসের বিভিন্ন ফলের। কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলা মেতে ওঠে উৎসব আমেজে। বৈচিত্র্যময় সমারোহে বসে বৈশাখী মেলা। এতে লোকগান, পুতুলনাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, সার্কাস ইত্যাদি আকর্ষণ করে সবাইকে।
ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে রুদ্রমূর্তির বৈশাখে প্রকৃতিতে থাকে ভিন্ন চেহারা। কালবৈশাখী আসে তীব্রবেগে। উড়িয়ে নিয়ে যায় অভাগীর জীর্ণ কুটির। উপকূলে বিপদ হয়ে আসে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস। গ্রীষ্মের তাপদাহে তটস্থ হয় মানুষ। এ সময় আবহমান গ্রামবাংলার ছোট নদী, খালবিল, ডোবা শুকিয়ে যায়। কৃষকরা পড়েন বিপাকে। আবার এ সময়ে প্রকৃতি সাজে নতুন করে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি পেতে আশ্রয় নেয় সবুজ প্রকৃতির শীতল ছায়ায়। একদিকে বৈশাখ খরতাপ ছড়ায়, অন্যদিকে প্রকৃতির প্রশান্তির শীতল ছোঁয়া দেয় পরম আনন্দ। বৈশাখ আসে নতুন করে সব গড়তে। শীর্ণ-জীর্ণতায় সবুজ সতেজ করে তুলতে। ‘নূতনের কেতন উড়ে’ কালবৈশাখীতে। একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে শুরু হয় নবজীবনের হিসাবনিকাশ। স্বপ্নমুখর বৈশাখের রং তাই একটু বেশিই উজ্জ্বল। প্রকৃতি সজীব সতেজ আর মানুষেরা প্রাণচঞ্চল। 
সুহৃদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপহার পেল পহেলা বৈশাখে জন্ম নেওয়া জেরিনের পরিবার
  • জবি ছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আটক তরুণ
  • সুইডেনে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৩
  • ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে উৎসবকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে: মোহাম্মদ আজম
  • দৃশ্যপটে ‘আনন্দ’, মঙ্গল কোথায়
  • যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের
  • চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও লিভারপুলের কোন খেলোয়াড়েরা পদক পাবেন না
  • বিশ্বের বড় বড় উৎসব কোথায় হয়
  • প্রাগে পুরস্কৃত ‘নট আ ফিকশন’,অনলাইনে মুক্তি ১ মে
  • ফসলের ক্ষেতে আশার আলো