শিল্পীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচ দেখাল রোবট
Published: 11th, February 2025 GMT
রোবট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠছে। নানা কাজের দায়িত্ব নিয়ে রোবট আমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে সহজ করে দিচ্ছে। কিন্তু চীনের একটি কোম্পানি তাদের তৈরি রোবটকে দিয়ে যা করিয়েছে, তা দেখে বিস্ময় আর খুশিতে হাততালি দিয়ে উঠেছেন দর্শকেরা।
চীনের স্প্রিং ফেস্টিভ্যাল (বসন্ত উৎসব) ‘ইউনিট্রি এইচওয়ান’ নামে ১৬টি রোবট নৃত্য শিল্পীদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে সমন্বিত নৃত্য পরিবেশন করছে।
চান্দ্র নববর্ষে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভিতে প্রতিবছর বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ওই অনুষ্ঠান চলে। বিশ্বের যে কয়টি অনুষ্ঠান সবচেয়ে বেশি দর্শক টেলিভিশনের সামনে বসে উপভোগ করেন, তার একটি হচ্ছে চীনের এই বসন্ত উৎসব।
চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে চীনা নববর্ষ উৎসব শুরু হয়েছে। ১৫ দিন ধরে এই উৎসব চলবে। এবারের বসন্ত উৎসব চলাকালে একটি সমন্বিত নৃত্য পরিবেশনায় নৃত্যশিল্পীদের পাশাপাশি মঞ্চে উপস্থিত হয় ১৬টি রোবট। বাজনার তালে তালে লাফিয়ে এবং হাত-পা নেড়ে সেগুলো নাচতে থাকে। রোবটগুলো এত নিখুঁতভাবে নাচছিল যে হঠাৎ করে দেখলে সেগুলোকে মানুষ মনে হবে।
চীনের ঐতিহ্যবাহী ইংকো নাচ নেচেছে রোবটগুলো। এই নাচে বাজনার তালে তালে শরীর নাড়ানোর পাশাপাশি হাতে থাকা বস্তু ঘোরাতে এবং সেগুলো শূন্যে ছুড়ে আবার লুফে নিতে হয়।
মানুষ ও রোবট পাশাপাশি লাইনে দাঁড়িয়ে নৃত্য পরিবেশন করে। ইউনিট্রি রোবোটিকস নামের একটি প্রতিষ্ঠান রোবটগুলো তৈরি করেছে। তারা তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে রোবটের নাচের ভিডিও পোস্ট করেছে।
ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকে অনলাইনে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) এই উত্তরণের প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ আবার বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন।
সমালোচকদের যুক্তি, নাচ একটি সহজাত মানবশিল্পরূপ। প্রযুক্তি যত উন্নতই হোক, নৃত্য পরিবেশনায় কোনো রোবট মানুষের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বসন ত উৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।
রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।
অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা।
বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো।
বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া।
আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না।
বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’
বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা।
উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।
ঢাকা/টিপু