সন্তানদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজল দিঘী ইউনিয়নের নবীউল্লাহ-জাহানারা দম্পতি। দীর্ঘদিন কর্মহীন থাকায় ঋণের টাকা পরিশোধে নিজেদের কিডনি বিক্রির পোস্টার দেয়ালে সাঁটান।

স্থানীয়রা সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে বিষয়টি নজরে আসে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলীর। তিনি আশ্বাস দেন, অসহায় এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর। তারই ধারাবাহিকতায় নবীউল্লাহ-জাহানারা দম্পতিকে উপার্জনের জন্য একটি অটোরিকশা কিনে দিয়েছেন।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নবীউল্লাহর হাতে অটোরিকশার চাবি তুলে দেন জেলা প্রশাসক সাবেত আলী। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন ও কামাত কাজল দিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফায়েল প্রধান উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, নবীউল্লাহ-জাহানারা দম্পতির দুই সন্তান। এর মধ্যে, মেয়ে নিতু থ্যালাসেমিয়া এবং ছেলে জিহাদ অ্যাজমায় আক্রান্ত। দুই ছেলে-মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নেন তারা। কিন্তু, কর্মহীন থাকায় ঋণ পরিশোধ করতে পারছিলেন না। পরে নিজেদের কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। সেই মোতাবেক বিভিন্ন দেয়ালে কিডনি বিক্রির পোস্টার সাঁটান। স্থানীয়রা সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করলে বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসকের।

এদিকে, অটোরিকশা পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন নবীউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘‘রিকশা চালিয়ে অন্তত দুবেলা খাবার জোগানো যাবে। জেলা প্রশাসকসহ যারা সহযোগিতা করেছেন, সবাইকে ধন্যবাদ।’’

কামাত কাজল দিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল প্রধান বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন ছিলেন নবীউল্লাহ। তার ওপর সন্তানদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ঋণের টাকা পরিশোধে কিডনি বিক্রির বিজ্ঞাপন দিলে বিষয়টি নজরে আসে। তাকে জেলা প্রশাসক একটি অটোরিকশা কিনে দিয়েছেন। আশা করি, এটি তার পরিবারের উপকারে আসবে।’’

জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, ‘‘আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যখন জানতে পারি, এই অসহায় দম্পতি ঋণের টাকা পরিশোধে তাদের কিডনি বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছেন; তখন তাদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি নতুন অটোরিকশা কিনে দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাবেন, আর ধীরে ধীরে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন।’’

ঢাকা/নাঈম/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর শ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ