পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে কাফি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় মামলাটি করেন। এদিকে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আগামী সাত দিনের মধ্যে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন কাফি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কাফি এ দাবি জানান। কাফির বাড়ি জেলার কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা এ বি এম হাবিবুর রহমান রজপাড়া দ্বীন-ই-ইলাহী দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট।

নুরুজ্জামান কাফি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে রাজপথে থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়েছি। আমি দেশ ও দেশের মানুষের দাবি আদায়ের জন্য কথা বলেছি। সর্বশেষ বুলডোজারের ওপরে অবস্থান করে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার ঘোষণা দিয়েছি। হয়তো এটাই আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় ১১ ফেব্রুয়ারি কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী গ্রামের বাড়িটি টার্গেট করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের লোকজন পুড়িয়ে দেন। দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে নিমেষেই বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির আঙিনায় এখন শুধু কয়লার স্তূপ। আমি সাত দিনের মধ্যে এর ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’

কাফি আরও বলেন, ‘আজ আমি শিকার হয়েছি। আগামীকাল জুলাই-আগস্টে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নেওয়া আমার সহযোদ্ধাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে পারে। এই ভয় থেকে আমি বর্তমান সরকারকে আলটিমেটাম দিতে চাই যে জুলাই-আগস্টে অংশ নেওয়া আমার মতো কোনো সহযোদ্ধা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এই জীবন বাজি রেখে সরকারকে আমরা ক্ষমতায় বসিয়েছি। তাই সরকারকে আমি ও আমার সহযোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আজ আমি পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁদের কাছে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছি। আগামী সাত দিনের মধ্যে যদি প্রশাসন জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমি একাই রাজপথে লড়াই করে বিপ্লবী সরকারের ডাক দেব।’

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বাইরে থেকে দরজা আটকে বাড়ি পুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন কাফির বাবা এ বি এম হাবিবুর রহমান। তবে আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ার আগেই ঘরে থাকা পরিবারের ছয় সদস্য দরজা ভেঙে অক্ষত অবস্থায় বের হতে সক্ষম হন। আগুনে টাকা, মূল্যবান কাগজপত্র, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় কলাপাড়া থানায় মামলা করেন কাফি। মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও ধানমন্ডি ৩২-এ গুমের আস্তানা ধ্বংসে জনগণের সঙ্গে ফ্রন্টে থাকায় পরিকল্পিতভাবে বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলে উল্লেখ করেছেন নুরুজ্জামান কাফি।

কলাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.

মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কাফির ঘর পোড়ানোর ঘটনায় পুলিশের তদন্ত চলছে। তিনি আশা করছেন ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত খুঁজে বের করতে পারবেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ল ই আগস ট কল প ড় ঘটন য় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত না হলে তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির

জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর

দাবিগুলো হলো— আসন্ন জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা যখন জকসুর দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন প্রশাসন ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অনশন ভাঙিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহল নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”

তিনি বলেন, “ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় ওই মাসে নির্বাচন অসম্ভব। তাই ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচনের উপযুক্ত সময়।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা জানতে চাই, নির্বাচন পেছানোর মধ্য দিয়ে জকসু নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রক্রিয়া চলছে কিনা। পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে একটি মহল নির্বাচন পণ্ড করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ভোট হবে জকসু নির্বাচন—তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ