ঢাকার সাভার উপেজলার পুলিশ টাউন এলাকায় আজ শুক্রবার যাত্রীবাহী বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বাসের কয়েক যাত্রী বাধা দিতে গেলে ছিনতাইকারীদের ছুরির আঘাতে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। তাঁদের রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

কয়েকজন বাসযাত্রী জানান, মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকার গুলিস্তানের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল শুভযাত্রা পরিবহনের একটি বাস। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাভার উপজেলার পুলিশ টাউন এলাকায় ব্রিজের কাছাকাছি যাত্রী নেওয়ার উদ্দেশ্যে বাসটি থামান বাসের চালক। এ সময় ধারালো চাকু (ছোট আকৃতির) হাতে দুজন ব্যক্তি বাসে উঠেন। বাসে উঠেই তাঁরা সামনের দিকের যাত্রীদের তল্লাশি করে মুঠোফোন, ম্যানিব্যাগ ছিনিয়ে নেন। পরে তাঁরা কয়েকজন নারী যাত্রীর গলা থেকে চেইন ছিনিয়ে নেন।

ছিনতাইকারীরা বাসের পেছনের দিকে গেলে যাত্রীদের কয়েকজন তাঁদের বাধা দেন। এ সময় ছিনতাইকারীরা ধারালো ছুরি দিয়ে যাত্রীদের আঘাত করলে বেশ কয়েকজন আহত হন। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা বাস থেকে নেমে পালিয়ে যান।

ভুক্তভোগী এক নারী যাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি গেট থেকে ধানমন্ডি যাওয়ার জন্য শুভযাত্রা বাসটিতে উঠেছিলাম। ব্যাংক টাউন পার হওয়ার পর বাসে দুজন ছিনতাইকারী উঠেন। ছিনতাইকারীরা বাসের সামনের দিকে দুজন ব্যক্তিকে উদ্দেশ্যে করে ওই দুজনের জন্য সমস্যা উল্লেখ করে বাসের অন্যান্য যাত্রীদের কোনো সমস্যা নেই বলে জানান। পরে তাঁরা ওই দুজনসহ বাসের অনেকের কাছ থেকে মুঠোফোন, মানিব্যাগ কেড়ে নেন। আমার গলা থেকে সোনার চেইন ছিনিয়ে নেন। পরে একজন বাধা দিলে বাকি যাত্রীরা এগিয়ে আসেন। তখন ছিনতাইকারীরা কয়েকজনকে ছুরিকাঘাত করেন।

বাসযাত্রী আলকামা আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ছিনতাইকারীরা বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে মুঠোফোন, ম্যানিব্যাগ, চেইন ছিনিয়ে নেন। ছিনতাইকারীরা বাসের পেছনের দিকে গেলে কয়েকজন যাত্রী তাঁদের বাধা দেন। একপর্যায়ে যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের ধরতে গেলে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে চালকের সহকারীসহ তিনজন আহত হন। দুজনের পায়ে এবং একজনের হাতে মারাত্মক যখম হয়। পরে দ্রুতই তাঁরা বাস থেকে নেমে পালিয়ে যান। বাসে ১৫-২০ জন যাত্রী ছিলেন।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি জানার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দলকে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। এতে একজন শিক্ষকসহ হোটেলের দুই কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির নাম শিপন মিয়া (৩০)। তিনি বড়িকান্দি ইউনিয়নের নুরজাহানপুর গ্রামের মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক মিয়ার ছেলে। নবীনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, ওই দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে।

গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিরা হলেন বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এমরান হোসেন (৩৮) এবং হোটেলের দুই কর্মচারী—উপজেলার আলমনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন মিয়া (২০) ও চরলাপাং গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে নুর আলম (১৮)। এমরান উপজেলার শ্যামগ্রামের মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। তাঁর ভাই ঢাকায় কর্মরত পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেন।

বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মনেক ডাকাত এলাকাটা শেষ করে ফেলেছেন। তাঁর কারণেই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েছে। মনেক ডাকাতদের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে মনেক ডাকাতের ছেলে নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় মোন্নাফ মিয়া ও তাঁর ছেলে শিপনের দীর্ঘদিন ধরে একক প্রভাব ছিল। তাঁদের সঙ্গে একই এলাকার থোল্লাকান্দি গ্রামের মিস্টার মিয়ার ছেলে আরাফাত মিয়ার বিরোধ চলছিল। শনিবার রাত আনুমানিক নয়টার দিকে বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে শিপন মিয়া আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র একটি দল হোটেলে ঢুকে গুলি চালায়। এতে শিপনসহ হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াসিন ও নুর আলম গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দে বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার পর আরাফাত ও তাঁর সহযোগীরা দ্রুত পালিয়ে যান।

শিপনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর নুরজাহানপুরে পৌঁছালে মোন্নাফ মিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক গণি শাহ মাজারের অদূরে তালতলায় এমরান হোসেনের কার্যালয়ে হামলা চালান। সেখানে এমরান গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাঁরা থোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালিয়ে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাতে ঘটনাস্থলে অভিযান চালালেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। কারণ, উভয় পক্ষের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গুলিবিদ্ধ কাউকেই শনিবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়নি। তাঁদের হয়তো অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শিপনের ওপর হামলাকারী আরাফাত থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেনের আত্মীয়। এ কারণেই এমরানের কার্যালয়ে গিয়ে হামলা এবং তাঁকে গুলি করা হয়েছে।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত শিপন ডাকাত দলের সদস্য ছিলেন। শিপন ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে। ওই ঘটনায় একজন শিক্ষকসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে সবাই পলাতক। তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের
  • বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • দুই শিশুর ঝগড়ায় জড়ালেন বড়রা, বড় ভাইয়ের হাতে খুন ছোট ভাই
  • রাজশাহীতে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু