দেশে অভ্যুন্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে আবারো সোচ্চার হয়েছে উত্তরবঙ্গের জনগণ। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, ‘‘নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে পতিত আওয়ামী সরকার। গত ১৬ বছর ধরে তারা শুধু আশ্বাস দিয়ে গেছে, কিন্তু তিস্তাপাড়ের মানুষ বাস্তবে কিছুই দেখেনি।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘পানি চুক্তির পরিবর্তে স্বৈরাচার হাসিনা ভারতের কাছ থেকে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার আশীর্বাদ নিয়েছেন। তবে এবার অধিকার আদায়ে স্বোচ্চার থাকবে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’।’’ 

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রংপুর দুপুরে নগরীর নর্থভিউ হোটেলের কনফারেন্স হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

তিস্তা ইস্যুতে বিএনপির দুই দিনের নতুন কর্মসূচি

৮৫০ টন সার নিয়ে ভৈরবে ডুবলো জাহাজ

এ সময় আসাদুল হাবিব দুলু অভিযোগ করে বলেন, "মেগা প্রকল্পের নামে আওয়ামী লীগ শুধু স্বপ্ন দেখিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে। উত্তরের দুই কোটি মানুষের জন্য তিস্তা নদী অথচ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে পতিত আওয়ামী সরকার। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী মুক্ত বাংলাদেশে এবার উত্তরের মানুষ ন্যায্য অধিকার আদায়ে নদীপাড়ে আন্দোলনে থাকবে।’’

সম্প্রতি রংপুরে তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে আয়োজিত গণশুনানিতে সরকারের দুই উপদেষ্টার বক্তব্যের আপত্তি করেন দুলু। তিনি দাবি করেন, স্থায়ীভাবে সমন্বিত পরিকল্পনায় তিস্তার সমাধান করতে হবে।

তিস্তা নদীর অস্তিত্ব রক্ষার এই আন্দোলন আরো বেগবান করতে আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি নদীপাড়ে লাগাতার জনতার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক এই সমাবেশে উত্তরবঙ্গের মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এটি শুধু তিস্তা পাড়ের মানুষের নয়, গোটা উত্তরবঙ্গের অধিকার আদায়ের লড়াই।”

তিনি জানান, দুই দিনব্যাপী ওই সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আন্দোলনকে সফল করবেন। নদীপাড়ের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ যুগপৎ আন্দোলনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের রংপুরের সমন্বয়ক ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু, তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের অন্যান্য নেতারা।

ঢাকা/আমিরুল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নদ ব এনপ র সমন ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২২ বছর পর চাকা ঘুরছে রাজশাহী টেক্সটাইলের

দীর্ঘ ২২ বছর পর আবার চাকা ঘুরতে যাচ্ছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের। এরই মধ্যে কারখানাটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাতে কর্মসংস্থান হয়েছে এক হাজার জনের। সরকারি মালিকানাধীন বস্ত্রকলটি সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে (পিপিপি) আবারও চালু করতে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। আজ সোমবার প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারখানাটি পরীক্ষামূলক চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পিপিপিতে নেওয়ার পর রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের নাম বদলে রাখা হয়েছে বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে শিগগিরই কারখানাটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। এটি পুরোদমে চালু হলে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আজ দুপুরে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ-আরএফএলের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল, গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান, গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান ও বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, রাজশাহীতে অবস্থিত সরকারি এই টেক্সটাইল মিলটি ২২ বছর ধরে বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে এটি পিপিপিতে চালুর উদ্যোগ নেয় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। প্রায় ২৬ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কারখানাকে প্রাণ-আরএফএল উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। কারখানাটিতে তৈরি হবে শতভাগ রপ্তানিমুখী পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে থাকবে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটিতে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরে কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় গ্রুপটি। এরপর তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু হবে।

সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে তারা উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে।

আনিসুর রহমান বলেন, কারখানায় বর্তমানে সীমিত পরিসরে জুতা ও ব্যাগ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাতে রাজশাহীর প্রায় এক হাজার লোক কাজের সুযোগ পেয়েছেন। স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। কারখানায় উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি হবে।

রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসে কারখানা চালু করার প্রক্রিয়ায় কয়েক শ গাছ ও পুকুর ভরাটের বিষয়ে রাজশাহীতে সমালোচনা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনও করেছে। এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাইলে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, গাছ কাটা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তাঁরা সঠিক উপায় অবলম্বন করেই এগুলো করেছেন। বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। তার বিপরীতে তিন হাজার নতুন গাছ লাগানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২২ বছর পর চালু হচ্ছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিল
  • ২২ বছর পর চাকা ঘুরছে রাজশাহী টেক্সটাইলের