টেকনাফ সীমান্তে ৬৯ হাতবোমাসহ আটক ২
Published: 16th, February 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তে বিশেষ অভিযানে ৬৯টি বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ ২ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আটকরা হলেন, চাঁদপুর মতলব উত্তর থানা এলাকার নবুরকান্দি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মো. সম্রাট প্রধান (৩৩) ও নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানা এলাকার দক্ষিণ গারমোরা গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে মো.
রোববার দুপুরে এক ক্ষুদে বার্তায় টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আশিকুর রহমান বোমা ও সরঞ্জামাদিসহ ২ জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিজিবি অধিনায়ক জানান, রোববার ভোররাতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন-২ (বিজিবি) গোপন সংবাদে জানতে পারে- টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ফুলের ডেইল নামক এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে কিছু দুষ্কৃতকারী দেশীয় বোমা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ অবস্থান করছে। এই সংবাদে আমার নেতৃত্বে বিজিবির একটি আভিযানিক দল ওই এলাকার কয়েকটি জরাজীর্ণ টিনশেড বাড়ি ঘিরে কঠোর নিরাপত্তায় অভিযান পরিচালনা করে। এতে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে একটি জরাজীর্ণ ঘরের ভেতর থেকে তৈরি করা ৬৯টি হাতবোমা, ১.৬ কেজি সালফার, ১.৩ কেজি লালা, ৩১টি জর্দার কৌটা, ২২০ গ্রাম গুনাতার এবং ১টি প্লাসসহ দুইজন দুষ্কৃতকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়। এসময় বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় অবস্থানরত অপর দুই ব্যক্তি দ্রুত পালিয়ে যায়।
আটকরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র চুক্তিভিত্তিক বোমা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি ও সরবরাহ করেছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে- স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার, সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমুলক কাজে ব্যবহারের জন্য এসব বোমা তৈরি করা হচ্ছিল।
বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘আটকদের ও জব্দ বোমা, বোমা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ নিয়মিত মামলা করে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া পলাতকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে এবং ওই বাড়ির মালিকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আরও ৩৭ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার ও নওগাঁ সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ আরও ৩৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তাদের সবাইকেই বিজিবি আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। আটকরা সবাই নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। বিভিন্ন সময় কাজের জন্য অবৈধভাবে তারা ভারতে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে গত ৪০ দিনে ১ হাজার ৪৩৫ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিল বিএসএফ।
শুক্রবার ভোরে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার অচিন্তপুর সীমান্তের ২৯৫ নম্বর মেইন পিলারের ১ নম্বর সাব-পিলার এলাকা দিয়ে একই পরিবারের ১৪ জনসহ ১৫ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করেন। আটকদের মধ্যে ৯ শিশু ও ৩ নারী রয়েছেন।
বিজিবি জানায়, আটকরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। সবার দাবি, তারা নড়াইল জেলার কালিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা। ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর তারা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে কাজের জন্য মুম্বাই যান। তাদের বিরামপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
একই দিন ভোরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। বিজিবির নিউ পাল্লাথল বিওপির টহল দল তাদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। আটকদের মধ্যে তিন নারী ও ছয় শিশু রয়েছে। বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ জানান, আটকদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে গতকাল ভোরে নারী, শিশুসহ সাতজনকে ঠেলে দেয় বিএসএফ। এর মধ্যে তিন নারী, দুই পুরুষ ও দু’জন শিশু। সীমান্তের মেইন পিলার ৭৪৩-এর ১ নম্বর সাব-পিলার এলাকা থেকে তাদের আটক করে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অমরখানা ক্যাম্পের টহল দল। জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা নিজেদের বাংলাদেশি দাবি করেন। সবার দাবি, তারা নড়াইল ও যশোর এলাকার বাসিন্দা। এর আগেও চার দফায় নারী, শিশুসহ ৬০ জনকে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ।
এ ছাড়া নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে আছিয়া বেগম (৫০) নামে এক নারীকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ। গতকাল দুপুরে উপজেলার জগদ্দল মাঠের মধ্যে থেকে তাঁকে বিজিবি আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে। ওই নারী ১০ বছর ধরে ভারতের মুম্বাইতে একটি হাসপাতালে আয়ার কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি যশোর জেলার ইশবপুর নামক এলাকায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার মুন্সিপাড়া বিওপি কড়ইগড়া সীমান্ত দিয়ে দুই শিশুসহ ৯ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। তাদের মধ্যে আটজনের বাড়ি বাগেরহাট এবং একজনের ধোবাউড়ায়। তারা সবাই আট বছর ধরে ভারতের চেন্নাইয়ের বিভিন্ন স্থানে কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন।
বিজিবি জানায়, চেন্নাই পুলিশের ধাওয়া খেয়ে এই ৯ জন দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের মেঘালয়ের শীবগঞ্জ পুলিশ তাদের আটক করে।
(সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি ও সংবাদদাতার পাঠানো খবর)