বিএনপির আশ্রয়ে দাপুটে অবস্থানে আওয়ামী লীগ নেতা ডালিম!
Published: 16th, February 2025 GMT
আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়েও স্বপদে বহাল রয়েছেন কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একে ফাইজুল হক ডালিম।
গত ৫ই আগস্টের পর শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে যখন আওয়ামী লীগের নেতারা পলাতক রয়েছেন তখন স্থানীয় বিএনপি কয়েকজন নেতার আশ্রয়ে তিনি এখনো নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন। যা নিয়ে ক্ষোভ কাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে।
একে ফজলুল হক ডালিম বর্তমানে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান হোন। তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী আরেক আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম স্বপন।
তার আগে, এই ইউনিয়নে ডালিমের বাবা একেএম ফজলুল হক আওয়ামী লীগের সময় টানা চারবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। এদিকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করার আগে ফাইজুল ইসলাম ডালিম আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর অনুসারী ছিলেন।
পরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এমপি বাবু তাকে সমর্থন না দিলে সে তখন শামীম ওসমানের অনুসারী হোন। তবে পরে দিয়ে বাবুর সঙ্গে যোগসাজশ হয় তার। এর ফলে সারাদেশে যখন আওয়ামী লীগের অবস্থা শোচনীয় তখন দাপটের সঙ্গে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন একে ফাইজুল হক ডালিম।
এ কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা তার সাপোর্টে কালাপাহাড়িয়াতে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন। সেই সঙ্গে তার মাধ্যমে সাবেক এমপি বাবু এখনো আড়াইহাজারের প্রভাব বিস্তার করতে পারছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সালামত চৌধুরী, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক ও কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি আবু কালামের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সমর্থনে ফাইজুল হক ডালিম এখনো নিজের শক্তি ধরে রাখতে পেরেছেন। এদিকে গুটিকয়েকজন বিএনপির নেতার কারণে দলের বদনাম হচ্ছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ফাইজুল হক ডালিমের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি এর ৩-৪ গুণ বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া জন্ম নিবন্ধনে সরকারি ফি ৫০ টাকা হলেও তিনি নেন ৪০০ টাকা, ওয়ারিশের সনদের জন্য নেন ১ হাজার ৫০০-২ হাজার টাকা। ট্রেড লাইসেন্স করার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত মূল্য থেকে ৩-৪ গুণ বেশি টাকা নেন।
আওয়ামীলীগের বড় নেতা হয়েও স্বপদে তিনি চেয়্যারম্যানের দায়িত্ব পালন করে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে কাজ করছে ক্ষোভ। ডালিম চেয়ারম্যান একসময় নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করলেও নির্বাচনে শামীম ওসমানের কথায় প্রশাসন তখন তার পক্ষে কাজ করে।
চেয়ারম্যান হওয়ার পরে তিনি এলাকাতে আওয়ামীলীগের রাজত্ব কায়েম করেন। যা এখন চলমান রয়েছে। তাই এই মুহুর্তে তিনি এখনো কিভাবে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র আওয় ম করছ ন অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।