রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিকোলাইভে একটি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে তীব্র শীতের মধ্যে ওই এলাকার প্রায় ৪৬ হাজার মানুষকে বিদ্যুৎহীন রাত কাটাতে হয়েছে। ঘরবাড়ি গরম করার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ তাঁরা পাননি। ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ড্যানিস শিমহাল এ কথা জানান।

বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে, যাতে শূন্যের নিচে তাপমাত্রায় মানুষকে তীব্র শীতের মধ্যে রাখা যায়। মানবিক বিপর্যয়কর অবস্থা তৈরি করা যায়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, এ হামলার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। হামলার জেরে শহরটির এক লাখ বাসিন্দা তীব্র শীতের মধ্যে উত্তাপ পাচ্ছেন না।

আরও পড়ুনরাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় ইউরোপকে যুক্ত করা হবে না: ট্রাম্পের দূত১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এক্স পোস্টে জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘শহরটি খুবই সাধারণ। বেসামরিক অবকাঠামোও সাধারণ। এর সঙ্গে শত্রুতা কিংবা সম্মুখ যুদ্ধ পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই।’ মিকোলাইভবাসীকে শীত থেকে রক্ষা করতে ও তাপের ব্যবস্থা আবারও চালু করতে ‘নিরলসভাবে কাজ করা’ হচ্ছে বলেও জানান জেলেনস্কি।

রুশ বাহিনী রাতভর ইউক্রেনে ১৪৩টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, এর মধ্যে তারা ৯৫টি ড্রোন ভূপাতিত করতে পেরেছে। ৪৬টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারেনি। ড্রোন হামলা ঠেকাতে বৈদ্যুতিক চুম্বক প্রতিরোধব্যবস্থা ব্যবহারের কারণে সম্ভবত এটা সম্ভব হয়েছে।

ইউক্রেনে রাতভর এসব ড্রোন হামলায় অন্তত একজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দেশটির কিয়েভ অঞ্চলে কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। রোববার রাতে মিকোলাইভ শহরের তাপমাত্রা মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসার কথা ছিল।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইউক্রেনের টিকে থাকার সম্ভাবনা কম: জেলেনস্কি১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এদিকে জার্মানির মিউনিখে তিন দিনের নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। রোববার সম্মেলন শেষ হয়েছে। বৈঠকের ফাঁকে জেলেনস্কি ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদারে সহায়তার জন্য পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।

জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর তৃতীয় বর্ষপূর্তি সামনেই। বর্তমানে ইউক্রেনের ২০ শতাংশ নিজেদের দখলে নিয়েছে রাশিয়া। ধীরগতিতে হলেও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে।

ইউক্রেনে সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় গত সপ্তাহজুড়ে আকাশপথে প্রায় ১ হাজার ২২০টি বোমা হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এর মধ্যে ৮৫০টির বেশি ড্রোন হামলা। ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ৪০টির বেশি। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ কথা জানান জেলেনস্কি।

এ বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

আরও পড়ুনচেরনোবিলে রুশ ড্রোন হামলা১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র প র

এছাড়াও পড়ুন:

‘দাগি’ সিনেমা দেখতে টাঙ্গাইলে অস্থায়ী হল তৈরি করছেন নিশো ভক্তরা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নেই কোনো সিনেমা হল। তাই প্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো অভিনীত সিনেমা দেখার তীব্র আগ্রহ ও ভালোবাসায় আবারো অস্থায়ী সিনেমা হল তৈরি করছেন তার স্থানীয় ভক্তরা। সেখানে এবার প্রদর্শিত হবে নিশো অভিনীত বহুল আলোচিত সিনেমা ‘দাগি’। ভক্তদের ভালোবাসার টানে নিজ এলাকায় যাবেন আফরান নিশো।

শুক্রবার (২ মে) থেকে ভূঞাপুর স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের দোতলায় ৭ দিনব্যাপী প্রদর্শিত হবে আফরান নিশো অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমা। প্রতি টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ১০০ টাকা। প্রতিদিন ৪টি করে শো চলবে। প্রথম শো শুরু হবে বিকেল ৪টা থেকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে অস্থায়ী সিনেমা হল নির্মাণে কাজ করছেন একদল যুবক। জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশোকে ভালোবেসে গত বছর ‘সুরঙ্গ’ সিনেমার জন্য অস্থায়ী হল নির্মাণ করেছিলেন তারা। এবারো সেই ভালোবাসা থেকেই ‘দাগি’ সিনেমা প্রদর্শনের জন্য নির্মাণ করছেন প্রেক্ষাগৃহ।

আরো পড়ুন:

প্রযোজক তার সঙ্গে রাত কাটাতে বলেন: অঞ্জনা

নায়ক রুবেলের মৃত্যু গুজব: সোহেল রানার হুঁশিয়ারি

নিশো ভক্ত তন্ময় বলেন, “আফরান নিশো আমাদের এলাকার সন্তান। তার জন্য আমাদের অগাধ ভালোবাসা। তার অভিনীত সিনেমা ‘দাগি’ দেখার জন্য এখানে যে কর্মযজ্ঞ চলছে, সেটা সেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভূঞাপুরের মানুষ যেন নিশো ভাইয়ের সিনেমা দেখতে পারেন, তার জন্যই এই আয়োজন। আমরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি সিনেমাটি দেখার জন্য।”

বিশেষ চমক হলো— এই আয়োজনে অংশ নিতে নিজ এলাকাতেই যাবেন আফরান নিশো। প্রিয় নায়কের আগমন আর সিনেমা প্রদর্শনকে ঘিরে ইতোমধ্যে উৎসাহের জোয়ার বইছে ভূঞাপুরে।

ভক্তদের আয়োজনে নির্মিত অস্থায়ী এই সিনেমা হলটি তৈরি হচ্ছে ভূঞাপুর স্বাধীনতা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে। বিশাল স্ক্রিন ও উন্নত সাউন্ড সিস্টেমসহ আধুনিক সুবিধার এই আয়োজন স্থানীয়দের মাঝে এক ভিন্ন আবেগ সৃষ্টি করেছে।

আয়োজক কমিটির সদস্য হাদী চকদার বলেন, “ভূঞাপুরে স্থায়ী হল না থাকলেও আমরা চেয়েছি নিশো ভাইয়ের ‘দাগি’ সিনেমাটি সবাই মিলে একসঙ্গে দেখতে। তিনি আমাদের গর্ব, আমাদের এলাকার সন্তান। তাই এবারো আমরা তাকে দাওয়াত দিয়েছি এবং তিনি আসছেন। এটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি।”

ভক্তদের আয়োজনে একজন অভিনয়শিল্পীর সরাসরি অংশগ্রহণ, অস্থায়ী হলেও একটি হল নির্মাণ এবং সিনেমা দেখার এই উৎসব— ভূঞাপুরে যেন নতুন করে সিনেমাপ্রেমের আলো জ্বেলে দিচ্ছে।

গত কয়েক বছর ধরে ঈদকে কেন্দ্র করে নির্মিত সিনেমাগুলো নিয়েই অধিক আলোচনা ও সমালোচনা দেখা যাচ্ছে। ঈদুল ফিতরে বেশ কটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম আফরান নিশো অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমা। শিহাব শাহীন পরিচালিত এ সিনেমায় নিশোর বিপরীতে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা।

ঢাকা/কাওছার/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ