ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্ক শীতল হতে শুরু করে। তবে রাজনৈতিক এ উত্তেজনার প্রভাব ‘আন্তঃদেশীয়’ বিয়েতে প্রভাব ফেলেনি। ২০২৪ সালে বাংলাদেশি ও ভারতীয়দের মধ্যে বিয়ের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০০ বাংলাদেশি নারী ভারতীয়দের বিয়ে করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। একই সময় ১১ বাংলাদেশি পুরুষ ভারতীয় নারীকে বিয়ের আবেদন করেন। সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২৪ সালেই বাংলাদেশি-ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিয়ের নিবন্ধন হয়। ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৪৮৬ বাংলাদেশি পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয়দের বিয়ে করার আবেদন করেন।

তবে যেসব বাংলাদেশি ভারতীয়দের বিয়ে করেছেন তাদের কতজন ভারতে অবস্থান করবেন সেটি নিশ্চিত নয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, নাগরিকত্ব আইন বিবেচনা করে বলা যায়, তাদের বেশিরভাগেরই ভারতে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারতের ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, যদি অন্য কোনো দেশের নাগরিক ভারতীয়দের বিয়ে করেন তাহলে তারা ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া যদি কোনো শিশুর বাবা অথবা মা ভারতীয় হন, তাহলে ওই শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভারতের নাগরিকত্ব পাবে।

রেকর্ড অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ৪১০ বাংলাদেশি নারী ভারতীয় বর বেছে নিয়েছেন। অপরদিকে ৭৬ বাংলাদেশি পুরুষ ভারতীয় বধূ নিয়ে দেশে এসেছেন।

গত বছর যে ১০০ বাংলাদেশি নারী ভারতীয়দের বিয়ে করার আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে ৭৯ জন ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী, ১৬ জন মুসলিম এবং পাঁচজন খ্রিস্টান। অপরদিকে যে ১১ বাংলাদেশি পুরুষ ভারতীয় নারীদের বিয়ে করেছেন তাদের মধ্যে ৯ জনই হিন্দু। বাকি দুজন মুসলিম।

এদিকে ২০২৩ সালের অক্টোবরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেখানে বিদেশিদের ভারতীয়দের বিয়ে করার পদ্ধতিটি সহজ করে দেয়। এরপর থেকে বাংলাদেশি-ভারতীয়দের মধ্যে বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ