মানিকগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে মুনীর চৌধুরী প্রথম জাতীয় নাট্য উৎসব। এ উৎসবে গত রোববার রাতে মঞ্চস্থ হয়েছে ‘দ্য ডার্ক ক্রিস্টাল’। এতে নির্দেশনা দিয়েছেন  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক নাট্যকার ইরা আহমেদ। 
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘লাশের দেশ’ নামে নাটকের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সাত দিনব্যাপী এ উৎসবের ঢাকা বিভাগের প্রতিযোগিতা। 
মানিকগঞ্জ জেলা কালচারাল অফিসার মুখলেসা হিরারি জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ উৎসব উদ্বোধন করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড.

সৈয়দ জামিল আহমেদ। এতে ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর ও মাদারীপুর শিল্পকলা একাডেমির নাট্যদল অংশ নিয়েছে। এখান থেকে সেরা দুটি দল জেলায় নির্বাচিত হয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশ নেবে।
‘দ্য ডার্ক ক্রিস্টাল’ নাটকের নাট্যকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ইরা আহমেদ বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এ নাটকে ৬টি ভাগে ১৪ জন শিল্পী অভিনয় করেছেন। ক্ষমতা, পুঁজিবাদ, নারীর প্রতিবন্ধকতা, ডিজিটাল প্রতারণা, নারীর মানসিক অবস্থা, ধর্ষণ প্রভৃতি বিষয় উঠে এসেছে নাটকটিতে।
তিন সন্তান নিয়ে নাটক দেখতে এসেছেন তৃষ্ণা সরকার। তিনি বলেন, এখনকার সন্তানরা মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এ ধরনের নাটক নিয়মিত হলে সন্তানরা অনেক কিছু শিখতে পারবে।
কলেজ শিক্ষার্থী সোহেল রানা জানান, এ ধরনের হলে বসে আগে নাটক দেখার সুযোগ হয়নি তাঁর। ‘দ্য ডার্ক ক্রিস্টাল’ নাটকটি অনেক ভালো লেগেছে। এ নাটকে সমাজের অনেক অসংগতি তুলে ধরা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নাট্যব্যক্তিত্ব ডক্টর ইসলাম শরিফ বলেন, ভাষা আন্দোলনের সময় মুনীর চৌধুরী জেলে বসে নাটক লিখেছেন। ৫ আগস্ট পরবর্তীকালে নাটকের ক্ষেত্রে স্থবিরতা নেমে আসে। শিল্পচর্চাকে গতিশীল করতে সারাদেশে নাট্যকর্মীদের কর্মশালা হয়েছে। শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে প্রতিটি বিভাগে মঞ্চস্থ হচ্ছে নাটক। এর পর বাছাই করে প্রতিটি বিভাগ থেকে দুটি দল জাতীয় পর্যায়ে নাটক মঞ্চস্থ করবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ল পকল এক ড ম

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার