শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত হচ্ছে বহুভাষিক চলচ্চিত্র উৎসব
Published: 17th, February 2025 GMT
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) চলচ্চিত্র বিষয়ক সংগঠন চোখ ফিল্ম সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত হতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী বহুভাষিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০২৫।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
ভাষার মাসকে কেন্দ্র করে এবং মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এ উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সদস্যরা। এতে বাংলা, ইংরেজি, ইতালিয়ান, মালায়ালাম, চাইনিজ এবং হিন্দি ভাষার মোট ১০টি সিনেমা প্রদর্শিত হবে।
সংগঠনটির সদস্যরা জানান, মা এবং মাতৃভাষার সঙ্গে প্রতিটি মানুষের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মানুষ প্রথমে তার মায়ের ভাষাতেই কথা বলতে শেখে। একসময় পৃথিবীতে প্রায় ৭ হাজার ভাষা ছিল, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩ হাজারে। এ বাস্তবতাকে সম্মান জানিয়ে এবং পৃথিবীর সকল ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের লক্ষ্যে চোখ ফিল্ম সোসাইটি আয়োজন করছে ‘বহুভাষিক চলচ্চিত্র উৎসব – ২০২৫’।
তারা আরও জানান, বহুভাষিক চলচ্চিত্র উৎসবটি ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের একটি বিশেষ মাধ্যম। এর মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ভাষার বৈচিত্র্য সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে।
এর আগে দুইবার এ উৎসবের আয়োজন করেছিল সংগঠনটি। তৃতীয়বারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করছে তারা।
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স গঠনট এ উৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
ফসলের ক্ষেতে আশার আলো
বৈশাখ মাস, চারদিকে উৎসবের আমেজ। সেই উৎসবের ঢেউ লেগেছে শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে। নতুন ধান ঘরে তোলার ধুম লেগেছে হাওর অঞ্চলে; বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি এলাকায়। হাওরের পুবালি বাতাসে এখন পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। বৈশাখ এলেই সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে চিরচেনা এ রূপ চোখে পড়ে। ঠা-ঠা রোদ মাথায় নিয়ে ক্ষেতে ধান কাটেন কৃষক। অন্যদিকে চলে মাড়াই। কিষানিরা মনের আনন্দে মাড়াই করা ধান শুকান। বিকেলের শান্ত রোদে শুকনো ধান মাথায় নিয়ে ঘরে ফেরেন।
ধান কাটা উৎসবে শুধু কিষান-কিষানি নন, সব বয়সী মানুষই যোগ দেন। হাওরে এটি এক অনন্য উৎসব। চলে বৈশাখজুড়ে। এ উৎসবের কাছে কাঠফাটা রোদ, ঝড়-বৃষ্টি যেন তুচ্ছ। ধানের সবুজ শীষের রং যখন লালচে হতে শুরু করে, তখন কৃষকের মনের রং বদলায়। চোখ-মুখ খুশিতে ভরে ওঠে। লোকমুখে প্রচলিত– বছরের প্রথম দিনে ঘরে ফসল তুললে সারাবছর অভাব থাকে না। তাই তো হাওরে চলছে পাকা ধান কাটার উৎসব। তবে চলতি মৌসুমে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ধান তলিয়ে যায়। যাতে অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
আনন্দ-বেদনার এ বৈশাখে প্রকৃতি নতুন বিন্যাসে সাজে। বসন্তে প্রকৃতিতে যে রং লাগে, তা পূর্ণতা পায় বৈশাখে। অসীম আকাশে নানা বর্ণের মেঘের আনাগোনা আমাদের মনে সঞ্চারিত করে সঞ্জীবনী মন্ত্র। চোখে প্রশান্তি এনে দেয় সর্ববিস্তৃত প্রকৃতি। এ সময় চারদিকে আগুন ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, জারুল, বাগানবিলাসসহ প্রকৃতিতে রঙের ছড়াছড়ি। দেখা মেলে আম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুলসহ মধুমাসের বিভিন্ন ফলের। কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলা মেতে ওঠে উৎসব আমেজে। বৈচিত্র্যময় সমারোহে বসে বৈশাখী মেলা। এতে লোকগান, পুতুলনাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, সার্কাস ইত্যাদি আকর্ষণ করে সবাইকে।
ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে রুদ্রমূর্তির বৈশাখে প্রকৃতিতে থাকে ভিন্ন চেহারা। কালবৈশাখী আসে তীব্রবেগে। উড়িয়ে নিয়ে যায় অভাগীর জীর্ণ কুটির। উপকূলে বিপদ হয়ে আসে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস। গ্রীষ্মের তাপদাহে তটস্থ হয় মানুষ। এ সময় আবহমান গ্রামবাংলার ছোট নদী, খালবিল, ডোবা শুকিয়ে যায়। কৃষকরা পড়েন বিপাকে। আবার এ সময়ে প্রকৃতি সাজে নতুন করে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি পেতে আশ্রয় নেয় সবুজ প্রকৃতির শীতল ছায়ায়। একদিকে বৈশাখ খরতাপ ছড়ায়, অন্যদিকে প্রকৃতির প্রশান্তির শীতল ছোঁয়া দেয় পরম আনন্দ। বৈশাখ আসে নতুন করে সব গড়তে। শীর্ণ-জীর্ণতায় সবুজ সতেজ করে তুলতে। ‘নূতনের কেতন উড়ে’ কালবৈশাখীতে। একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে শুরু হয় নবজীবনের হিসাবনিকাশ। স্বপ্নমুখর বৈশাখের রং তাই একটু বেশিই উজ্জ্বল। প্রকৃতি সজীব সতেজ আর মানুষেরা প্রাণচঞ্চল।
সুহৃদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়