রাষ্ট্রপতিকে শহীদ মিনারে দেখতে চায় না বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ
Published: 19th, February 2025 GMT
জুলাই ও আগস্টে গণহত্যা চলার সময়ে নীরবতা পালন করায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবউদ্দিন চুপ্পুকে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে না আসার আহ্বান জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে চলমান গণঅবস্থান থেকে এ ঘোষণা দেন জুলাই বিপ্লবের পর গঠিত প্রথম ছাত্র সংগঠনটির আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ।
তিনি বলেন, “জুলাই ও আগস্টে আমরা ২ হাজারেরও বেশি ভাই-বোনকে হারিয়েছি। কিন্তু পুরো ঘটনার সময় রাষ্ট্রপতি মো.
তিনি আরো বলেন, “ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে তার পদত্যাগের দাবি জানানো হলেও তিনি সরে যাননি। কিন্তু তাকে জনগণও মেনে নেয়নি। তিনি স্রেফ কায়েমী স্বার্থবাদীদের মদদে টিকে আছেন। আমরা স্পষ্ট করে জানাতে চাই, সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে জনগণ জনপরিসরে দেখতে চায় না।”
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “তার উচিত বঙ্গভবনের চার দেয়ালের ভেতরে থেকেই জুলাইয়ে নিজের ভূমিকা পর্যালোচনা করা। ফ্যাসিবাদীদের সবার পতনের পর নিজের টিকে থাকার অনর্থকতা অনুধাবন করা। আশা করছি তিনি বিদায়ের তাগিদ বুঝতে পারবেন।”
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বলেন, “আমাদের দাবি হলো ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবউদ্দিন চুপ্পু জুলাই বিপ্লবের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পা রাখবেন না। তিনি একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসবেন না।”
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে আওয়ামী লীগ ও দলটির মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গণঅবস্থান কর্মসূচি চলছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই নেতা মো. ওমর ফারুক ও আবু সাঈদের অনশনের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে এতে সম্পৃক্ত হয় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি যাত্রাবাড়ীর শহীদ রানা তালুকদারের পরিবার এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালানোর আহ্বান জানান। তার অনুরোধে অনশন ভেঙে লাগাতার গণঅবস্থান চলছে। গণবক্তব্য, আবৃত্তি, জুলাই গণহত্যার তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, কবিতা আবৃত্তি ও র্যাপ সঙ্গীত পরিবেশনসহ নানা আয়োজনে চলছে এ কর্মসূচি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ষ ট রপত
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ