সড়কে থেমে গেল সাংবাদিক মাসুমার লড়াই, একা হয়ে গেল ছেলে মেঘ
Published: 19th, February 2025 GMT
মেঘের বয়স যখন দুই বছর, তখন তার বাবা রাজনৈতিক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ছেলেকে মানুষ করতে লেখাপাড়ার পাশাপাশি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নিয়েছিলেন মা মাসুমা ইসলাম। জীবন গুছিয়ে নিয়ে সবে সুদিনের স্বপ্ন দেখছিলেন মাসুমা। হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় থেমে গেল এই সাংবাদিকের জীবনের লড়াই। একা হয়ে গেল ১২ বছরের ছেলে মেঘ।
মাসুমা ইসলাম বেসরকারি এখন টেলিভিশনের রাজশাহী ব্যুরো অফিসের সাংবাদিক ছিলেন। এই বিভাগীয় শহরে টেলিভিশনে কাজ করা একমাত্র নারী সাংবাদিক ছিলেন তিনিই। গতকাল মঙ্গলবার নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের বাড়িতে যখন তাঁর দাফন করা হয়, তখন কবরস্থানের প্রাচীর ধরে পাথরের মতো দাঁড়িয়েছিল ছেলে মেঘ। তার চোখে কোনো অশ্রু ছিল না। দেখে মনে হলো, চাপা কান্না বুকে নিয়ে ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে।
বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে টেলিভিশন সাংবাদিকতায় একমাত্র নারী ছিলেন মাসুমা ইসলাম.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে।
আরো পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
ঢাকা/শরিফুল/রফিক