জার্মানিতে বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা, ক্যারিয়ার গঠন এবং সহজে স্থায়ী বাসিন্দা (চজ) হওয়ার সুযোগ- এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশিদের জন্য জার্মানিতে রয়েছে বিশাল সম্ভাবনা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০৩৬ সালের মধ্যে প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন বা ৭৫ লাখ কর্মজীবী অবসরে যাবেন, যা দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করবে। জার্মানিতে দক্ষ কর্মী হিসেবে কাজ করতে চাইলে হতে পারে বিশাল এক সুযোগ।

বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা ও অভিবাসন’ বিষয়ক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন জার্মানিভিত্তিক মিডিয়া পার্সোনালিটি মাহমুদুল হাসান। জার্মানির ইগালটিউব ও ডিগ্রিওলা ডটকমের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সহযোগিতা করে আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তর সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ট্যাপট্যাপ সেন্ড’।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চ্যানেল আইয়ের সিনিয়র রিপোর্টার মাশরুর শাকিল, সিনিয়র সাংবাদিক মোতাহার হোসেন, প্রকৌশলী নাজমুল হাসান, আঁখি জাহান প্রমুখ।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জাহিদ আনোয়ারসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক মাহমুদুল হাসান বলেন, “জার্মানিতে বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে দক্ষ কর্মীর সংকট। তাই যে কেউ যদি নিজেকে যোগ্য করে তোলে, তাহলে দেশটিতে কাজের সুযোগের অভাব হবে না।”

তিনি আরো বলেন, উচ্চশিক্ষা, আউসবিল্ডুং এবং অপরচুনিটি কার্ড-এর মাধ্যমে সহজেই জার্মানিতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “অপরচুনিটি কার্ড পেতে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করে আবেদন করা যায়, যা এক বছরের জন্য ভিসা দেয় এবং এই সময়ে জার্মানিতে গিয়ে চাকরি খোঁজার সুযোগ পাওয়া যায়। এছাড়া আউসবিল্ডুং (পেশাগত প্রশিক্ষণ) গ্রহণের মাধ্যমে অনেকটাই নিশ্চিত চাকরি নিয়ে জার্মানিতে যাওয়া সম্ভব। বর্তমানে প্রতি বছর ৫ লাখ আউসবিল্ডুং পদ খালি হয়, যার মধ্যে প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ পদ পূরণ হয়, বাকিগুলো শূন্য থাকে। তবে আউসবিল্ডুং প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য জার্মান ভাষায় দক্ষতা থাকা বাধ্যতামূলক।” 

তাই জার্মান ভাষা শেখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

পেশায় সফ্টওয়্যার ডেভেলপার ও ট্যাপট্যাপ সেন্ড বাংলাদেশ-এর মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর হাসান সেমিনারে বলেন, স্বল্প-খরচের অর্থ স্থানান্তর পরিষেবা, যা আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্সকে সহজ ও সাশ্রয়ী করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। 

সেমিনারে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মপ্রত্যাশীদের জন্য জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

ঢাকা/এএএম/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বিপজ্জনক নজির

যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে ২০ কোটি ডলারের চুক্তির মধ্য দিয়ে কয়েক মাসের টানাপোড়েনের অবসান ঘটেছে। তবে শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এটি উচ্চশিক্ষার ওপর সরকারের ‘আক্রমণের’ প্রথম দফা মাত্র।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে হওয়া এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনেক বিষয়ে সমঝোতা করতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর সরকারের নজরদারিও বেড়েছে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্য অনেক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেভাবে অনেক ছাড় দিয়েছে ও সরকারের নজরদারি বেড়েছে, তা ভবিষ্যতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপরও একইভাবে চাপ প্রয়োগের নীলনকশা হয়ে উঠতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এই বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুরু করা ‘যুদ্ধের’ প্রথম নিশানা হয় নিউইয়র্কের এ বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলা করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।

এ অভিযোগের পর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় লাখ লাখ ডলারের ফেডারেল তহবিল হারায়। নতুন গবেষণা অনুদানের জন্য আবেদন করার সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়। গবেষণাগারের জরুরি তহবিল স্থগিত হয়ে যায় এবং অনেক গবেষক চাকরি হারান।

তবে গত সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারকে ২০ কোটি ডলার দেওয়ার (জরিমানা হিসেবে) ও ইহুদিবিদ্বেষ–সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সরকারি তদন্ত মীমাংসার জন্য অতিরিক্ত ২ কোটি ১০ লাখ ডলার পরিশোধে রাজি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর এত বড় মাত্রায় সরকারি হস্তক্ষেপ আগে হয়নি। সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি।ব্রেনডন ক্যান্টওয়েল, মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক

আমেরিকান কাউন্সিল অন এডুকেশনের সভাপতি টেড মিচেল বলেন, আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর আগেই তহবিল কেটে নেওয়ায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একপ্রকার ‘টালমাটাল অবস্থায়’ পড়ে গেছে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড পোজেন এতে একমত পোষণ করে বলেন, শুরু থেকেই চুক্তিটি যেভাবে সাজানো হয়েছে, তা বেআইনি ও জোরজবরদস্তিমূলক। তিনি চুক্তিটিকে ‘চাঁদাবাজির বৈধ রূপ’ উল্লেখ করে এর কঠোর সমালোচনা করেন।

এ চুক্তির আওতায় শুধু ইহুদিবিদ্বেষের সমাধানই নয়, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি, ভর্তির সময় জাতি-বর্ণের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা ও ক্যাম্পাসে ছেলে–মেয়েদের আলাদা জায়গাসহ কিছু বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সমঝোতা করতে হয়েছে।

চুক্তির আওতায় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একজন স্বাধীন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিতে রাজি হয়েছে। তাঁর কাজ হলো চুক্তি কার্যকর করা, জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য সরকারকে দেওয়া ও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ইহুদিবিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ