‘শিবির কোপানো জায়েজ’ লেখা ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
Published: 19th, February 2025 GMT
‘শিবির কোপানো জায়েজ ছিল, আছে, থাকবে ইনশাল্লাহ’— ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রদল নেতার এমন স্ট্যাটাসের প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে আইনের আওতায় আনতে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে নোয়াখালী জেলা ছাত্রশিবির।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় দুইজন আইনজীবীসহ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নোয়াখালীশহর শাখার আইন সম্পাদক আবদুল কাউয়ুম বাদী হয়ে এ অভিযোগ করেন। এ সময় শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও নোয়াখালী শহর শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমানসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্তরা হলেন, নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের মো.
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এই নেতা নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, ‘‘শিবির কোবানো (কোপানো) জায়েজ ছিলো, আছে, থাকবে ইনশাল্লাহ’’। স্ট্যাটাস দেওয়ার পরপরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ব্যাপক সমালোচনার মুখে কিছু সময় পর তিনি পোস্টটি মুছে ফেলেন। সোহাগ গাজীর এই বিতর্কিত স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।
এদিকে, বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় অভিযোগ প্রদান শেষে শিবিরের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে আইন সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘‘দেশকে অস্থিতিশীল করার হীন চক্রান্তের অংশ হিসেবে ছাত্রদল নেতা সোহাগ গাজী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। উস্কানি দিয়ে ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়িয়ে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছেন। আমরা এ বিষয়ে আইনি প্রতিকার চেয়ে সংগঠনের সিদ্ধান্তমতে সুধারাম মডেল থানায় অভিযোগ করেছি।’’
এ সময় শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও নোয়াখালী শহর শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান বলেন, ‘‘আমরা ছাত্রদলের সঙ্গে দীর্ঘ ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজপথে একসঙ্গে থেকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করেছি। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে ঠিকই কিন্তু ছাত্রদলের তৃণমূলের কিছু নেতাকর্মীর মনে নতুন করে ফ্যাসিবাদের জন্ম নিচ্ছে। আমরা এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আহ্বান থাকবে, যে সকল অতি উৎসাহী নেতাকর্মী এ ধরনের কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’
এ বিষয়ে সুধরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, সাইবার সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/সুজন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র ত কর ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।