বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, নির্যাতন এবং ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) ১০ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া আরো নয় শিক্ষার্থীকে এক মাসের মধ্যে মুচলেকা দেওয়ার শর্তে ক্ষমা করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড.

সুমন কান্তি বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, নির্যাতন এবং ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া নয়জন শিক্ষার্থীকে আগামী ১ মাসের মধ্যে মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শাস্তির মুখোমুখি হওয়া এসব শিক্ষার্থীদের সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। তাদের সর্বনিম্ন ৩ মাস ও সর্বোচ্চ ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
  
বহিষ্কৃকতের সথ্যে বাংলা বিভাগের মো. ওমর ফারুক এলফিন, মো. আবু জাফর, অনিক কুমার ঘোষ, রুকাইয়া ইসলাম সুস্মিতা, অর্থনীতি বিভাগের ইস্কান্দার মির্জা, সংগীত বিভাগের মো. মেহেদী হাসান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ফাহমিদা আলী পুষ্পিতাকে ৩ মাস করে, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নাজমুল হাসান তুহিন ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মুনতাসিম ফুয়াদকে ৬ মাস করে এবং বাংলা বিভাগের আব্দুর রহমানকে ১ বছরের জন্য শিক্ষা-কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি বিগত জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সহায়তায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন।

ঢাকা/হাবিবুর/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ