কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী জহির মেহেদী হাসানকে লাঞ্ছিত ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন মিরপুর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এই কর্মসূচি থেকে ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

অভিযুক্ত আতাউল হক চঞ্চল মিরপুর পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আজাদুর রহমান আজাদের ছোটভাই। তিনি রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী। ঘটনার পর থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

প্রকৌশলী জহির মেহেদী এ ব্যাপারে মিরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, বুধবার বেলা অনুমান সাড়ে ১২টার সময় আমার অফিসে আতাউল হক চঞ্চল উপস্থিত হয়ে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় ও লাঞ্ছিত করেন। মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্স নামের প্রতিষ্ঠানের মালিক আতাউর রহমান রড ও সিমেন্ট বিক্রেতার একটি ভাউচারে স্বাক্ষর করতে বলেন। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে চঞ্চল ১০-১২ জন সন্ত্রাসীসহ আমার অফিস কক্ষে আমাকে মারধরের চেষ্টা করে ও লাঞ্ছিত করেন। এ সময় আমার সহকারী আমাকে রক্ষা করতে গেলে তাদেরকেও লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর আমার ব্যবহৃত মোবাইলটি আছাড় মেরে ভেঙে ফেলে এবং আমাকে দড়ি দিয়ে বাধার চেষ্টা করে।

জহির মেহেদী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই নেতার ভাই লোকজন নিয়ে এসে হুমকি দিয়ে বলেন, আমার কথামত উপজেলা চলবে, আমার কথা না শুনলি এখানে চাকরি কত্তি পারবা না।’

এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে মানববন্ধন করে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মানববন্ধনে মিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিবি করিমুন্নেছা বলেন, গতকাল উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের রুমে ঢুকে গালমন্দ করা হয়, তাকে ধাক্কা দেওয়া হয়। শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এসব সিসিটিভি ফুটেজে আমরা দেখেছি। আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা শক্ত হাতে এগুলো দমন করব। এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিবি করিমুন্নেসা, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কাজী মোহাম্মদ মেশকাতুল ইসলাম, সহকারী কৃষি অফিসার মতিউর রহমান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফি, উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ম্যানেজার সোহেল রানাসহ মিরপুর উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ।

মিরপুর থানার ওসি মোমিনুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনার বিষয়ে জানতে বিএনপি নেতার ভাই আতাউল হক চঞ্চলের মোবাইলে কল দিলে বন্ধ পাওয়া গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী

বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে  মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী,  শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।

বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি  বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।

সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”

তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।

বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”

বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড  প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী