চুয়েটে স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় সেরা হলেন যাঁরা
Published: 20th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ভর্তি সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত মেধাতালিকা অনুযায়ী ক গ্রুপের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন মাইশাতুল জান্নাত (রোল নম্বর ২৭১৯২) এবং দ্বিতীয় হয়েছেন প্রত্যয় দাশ (রোল ২৩৫২৬)। মাইশাতুল জান্নাত হলি ক্রস কলেজ ও প্রত্যয় চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী আহনাফ ফরিদ (রোল ২৪৩১৪)।
মাইশাতুল জান্নাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম হয়েছি আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। মোবাইলে চুয়েটের এসএমএস দেখে পরে কয়েকবার মেধাতালিকায় দেখে নিশ্চিত হয়েছি। ভর্তি পরীক্ষার এই সময়কাল একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে প্রচুর চাপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এত কষ্টের পরে এ সাফল্য পাওয়ায় অবশ্যই অনেক আনন্দিত।’
অন্যদিকে ‘খ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছেন সপ্তর্ষী দে (রোল ৫১৪১৮) এবং মেধাতালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ওয়াসিকুর রহনাম মিয়াজী (রোল ৫০৩৮৬)। তাঁরা উভয়েই সরকারি হাজী মুহাম্মদ মুহসিন কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। তৃতীয় হয়েছেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল আবিদ (রোল ৫১২৩১)।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মেধাতালিকায় স্থানপ্রাপ্ত সব প্রার্থীকে ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে ১৫ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ভর্তিসংক্রান্ত ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন চয়েস ফর্মের প্রয়োজনীয় তথ্য ও বিভাগের পছন্দক্রম প্রদান করতে হবে।
মেধাতালিকায় স্থানপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে ক গ্রুপের প্রথম ১ হাজার ৫০০ জন এবং খ গ্রুপের প্রথম ১০০ জনকে আগামী ৯ এপ্রিল প্রথম পর্যায়ে ভর্তির জন্য ডাকা হয়েছে। এদিন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টার মধ্যে নিরীক্ষা কমিটির কাছে উপস্থিত হয়ে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য বলা হয়েছে। নিরীক্ষা কমিটি দ্বারা প্রার্থীদের সনদ যাচাইয়ের পর ওই দিনই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) চুয়েটের স্নাতক প্রথম বর্ষে (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় পুরকৌশল, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল, যন্ত্রকৌশল এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের মোট ১২টি বিভাগে সংরক্ষিত ১১টিসহ মোট ৯৩১টি আসনের বিপরীতে মোট ১৬ হাজার ৬২১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। সে হিসেবে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের হার ছিল প্রায় ৮৩ শতাংশ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কল জ র শ ক ষ র থ পর ক ষ য় হয় ছ ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।