শনিবার রাতের ও দিনের নফল নামাজ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) ও হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, শনিবার রাতে চার রাকাত নফল নামাজ রয়েছে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি শনিবার দিন চার রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা পাঠাবেন, যারা কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকবে এবং কিরামান কাতেবিন তার জন্য শহীদের সওয়াব লিখতে থাকবে; সমুদ্রের ফেনা ও আকাশের তারকা সমান তার গোনাহ থাকলেও তা মাফ করে দেওয়া হবে।

রোববারের নফল নামাজ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.

) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রোববার চার রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে।

সোমবারের নফল নামাজ
হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সোমবার দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, সে অসংখ্য সওয়াবের অধিকারী হবে। হজরত উমর (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি সোমবার দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, তার জীবনের সব পাপ মাফ করে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনসুরার অর্থ বুঝে পড়লে নামাজে অন্য চিন্তা আসে না ২০ জানুয়ারি ২০২৫

মঙ্গলবার রাতের ও দিনের নফল নামাজ
হজরত সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, মঙ্গলবার রাতে ছয় রাকাত নফল নামাজ আছে। হজরত আনাস (রা.) বলেন, মঙ্গলবার দিনে ১০ রাকাত নফল নামাজ রয়েছে। হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) বর্ণনা করেন, মঙ্গলবার সূর্য ওঠার পর চার রাকাত নফল নামাজ পড়বে।

বুধবার রাতের ও দিনের নফল নামাজ
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, বুধবার রাতে চার রাকাত নফল নামাজ আছে। হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় চার রাকাত নফল নামাজ পড়বে। হজরত আনাস (রা.) বলেন, বুধবার দিনে চার রাকাত নফল নামাজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবারের নফল নামাজ
হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, বৃহস্পতিবার আট রাকাত নফল নামাজ পড়বে। হজরত আনাস (রা.) বলেন, বৃহস্পতিবার আট রাকাত নামাজ রয়েছে।

জুমার রাতের নফল নামাজ
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, শবে জুমুআ বা জুমার রাতে (বৃহস্পতিবার বাদ এশা) দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে। এই নামাজ বিশেষ ফলপ্রদ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার রাতে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে, তার পঠিত প্রতিটি হরফে আলোর জ্যোতি তৈরি হবে। সেই আলো হাশরের দিন তার সামনে সামনে দৌড়াবে। তার আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে। দোজখ থেকে তাকে নিষ্কৃতি দেওয়া হবে। সে ৭০ জন সগোত্রীয় পাপীর জন্য সুপারিশ করতে পারবে।

আরও পড়ুননামাজ পড়ার সময় সুরা আগে-পরে হলে কী করবেন২৭ জানুয়ারি ২০২৫

শুক্রবারের নফল নামাজ
জুমার দিনে মসজিদে গিয়ে চার রাকাত নফল নামাজ পড়া মুস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার দিনে মসজিদে গিয়ে চার রাকাত নফল নামাজ পড়লে ওই নামাজির জান, মাল, সন্তান, পরিজন এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সম্পদ আল্লাহ তাআলা অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন।

আশুরার নফল নামাজ
আশুরা তথা ১০ মহররমের রাতে ১০০ রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। আশুরার দিনেও ৮ রাকাত নফল নামাজ রয়েছে। হাদিস শরিফে আছে, যে ব্যক্তি এই নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে অসংখ্য সওয়াব দান করবেন এবং পরবর্তী এক বছর তার পরিবারে পর্যাপ্ত রিজিক প্রদান করবেন।

আরও পড়ুনসিজদার যত উপকারিতা১৩ জানুয়ারি ২০২৫

সলাতুর রগায়িব বা পয়লা রজবের নফল নামাজ
হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রজব মাসের প্রথম তারিখে ১০ রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। হজরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, অতি মহান চারটি রাত; যথা: রজব মাসের প্রথম রাত, শাবান মাসের মধ্য দিবসের রাত (শবে বরাত), শাওয়াল মাসের প্রথম রাত (ঈদুল ফিতর বা রমজানের ঈদের রাত), জিলহজ মাসের দশম রাত (ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদের রাত)। অন্য বর্ণনায় আছে, রজব মাসের প্রথম তারিখ মাগরিব ও এশার মাঝে দুই দুই রাকাত করে ২০ রাকাত নফল নামাজ পড়বে।
রজব মাসের প্রথম বৃহস্পতিবারের নফল নামাজ
রজব মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার রোজা রাখবে এবং প্রথম জুমার রাতে (বৃহস্পতিবার দিবাগত সন্ধ্যায়) মাগরিব ও এশার মাঝে দুই দুই রাকাত করে ১২ রাকাত নফল নামাজ পড়বে।

রজব মাসের প্রথম শুক্রবারের নফল নামাজ
রজব মাসের প্রথম শুক্রবার জোহর ও আসরের মধ্যখানে চার রাকাত বা ১২ রাকাত নফল নামাজ পড়বে।

মধ্য রজবের নফল নামাজ
রজব মাসের ১৫ তারিখে ১০০ রাকাত নফল নামাজ পড়া মুস্তাহাব।

রজব মাসের শেষার্ধের নফল নামাজ
রজব মাসের ১৬ তারিখ থেকে শেষ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন ৫০ রাকাত নফল নামাজ পড়া মুস্তাহাব।

আরও পড়ুননামাজ বিশ্বাসীদের কাছে মিরাজ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

শবে মিরাজের নফল নামাজ
শবে মিরাজে (রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে) ১২ রাকাত নফল নামাজ পড়া মুস্তাহসান; একে সালাতুল মিরাজ বলে।

শাবান মাসের প্রথম দিনের নফল নামাজ
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, শাবান মাসের প্রথম তারিখে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে; এর বিনিময়ে আল্লাহ পরকালে জান্নাতে এমন কিছু দান করবেন, যা মানুষের চোখ কখনো দেখেনি, কান কখনো তার বর্ণনা শোনেনি এবং কোনো মানুষের মনে অনুরূপ কল্পনাও হয়নি। এ নামাজের বরকতে তাকে দুনিয়াবি ঝামেলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হবে, রিজিক বৃদ্ধি করে দেওয়া হবে এবং হাশরের দিনে কঠিন বিপদ থেকে রক্ষা করা হবে।

শাবান মাসের প্রথম দিনের নফল নামাজ বা সালাতুল খায়ের নফল নামাজ
হজরত আনাস (রা.) থেকে এবং আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে মুজাহিদ (র.) বর্ণনা করেন, শাবান মাসের মধ্যরাতে (শবে বরাতে) ১০০ রাকাত নফল নামাজ রয়েছে। এই নামাজ দুই রাকাত করে পড়তে হয়।

আরও পড়ুনফজরের নামাজ পড়লে কয়েকটি উপকারের কথা ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

২৭ শাবানের নফল নামাজ
হজরত ওয়াসিলা ইবনে আসকা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ২৭ শাবান রাতে চার রাকাত নফল নামাজ রয়েছে।

রমজান মাসের বিভিন্ন তারিখের নফল নামাজ
রমজান মাসের ১০ তারিখ রাতে চার রাকাত নফল নামাজ; ১৫ রজমানের রাতে চার রাকাত; ২০ রমজানের রাতে দুই রাকাত বিশেষ নফল নামাজ পড়া উত্তম।

শবে কদরের নফল নামাজ
রমজান মাসের ২৭ তারিখ রাতে (শবে কদরে) নফল নামাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কদরের রাতে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে, আল্লাহ তার ও তার পিতা-মাতার গোনাহ মাফ করে দেবেন। ফেরেশতাদের তার জান্নাতে গাছ লাগানোর জন্য পাঠাবেন; বেহেশতে প্রাসাদ নির্মাণ করবেন; তথায় চার প্রকার নদী প্রবাহিত করার আদেশ দেবেন। এই ব্যক্তি মৃত্যুর আগে দুনিয়াতে থেকেই এসব স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করে যাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করবে।

শেষ রমজানের নফল নামাজ
রমজান মাসের ৩০ তারিখ রাতে ১২ রাকাত নফল নামাজ রয়েছে।

আরও পড়ুনফজরের নামাজ পড়লে ১০ পুরস্কার ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ঈদুল ফিতরের রাতের ও দিনের নফল নামাজ
শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখ ঈদুল ফিতর বা রমজানের ঈদ। এই রাতে ১০ রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের নামাজ থেকে ফেরার পর চার রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়।

শাওয়াল মাসের নফল নামাজ
হজরত আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) হজরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি শাওয়াল মাসে (দিনে বা রাতে) আট রাকাত নফল নামাজ পড়বে, আল্লাহ তার অন্তরে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ধারা প্রবাহিত করে দেবেন। তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং ওই অবস্থায় সে মারা গেলে শহীদি মর্যাদা লাভ করবে। তাকে ঋণমুক্ত করা হবে, তার উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে, জান্নাতে বাগান লাভ করবে।

জিলহজ মাসের নফল নামাজ
৯ জিলহজ (৮ জিলহজ দিবাগত রাত) আরাফাতের রাতে ১০০ রাকাত নফল নামাজ পড়া অতি উত্তম।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: যুগ্ম মহাসচিব: বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক: আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম।

আরও পড়ুনযেভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এল১৯ অক্টোবর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র ত র ও দ ন র নফল ন ম ম স র প রথম ত র খ দ ন র নফল ন ম জ ব র র নফল ন ম রমজ ন ম স র আল ল হ ত রমজ ন র বর ণ ত ক ত কর র জন য গলব র করব ন আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নীতি সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ, কী প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতে

অবশেষে সুদের হার কমিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের পর এই প্রথম সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে দুর্বলতার লক্ষণ, আফ্রো-আমেরিকানদের মধ্যে উচ্চ বেকারত্ব, কর্মঘণ্টা কমে যাওয়া ও নতুন চাকরি সৃষ্টির গতি কমে যাওয়ায় ফেড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়ে ৪ থেকে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়ার পর ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাসে সুদহার আরও কমতে পারে। তিনি বলেন, শ্রমবাজারের ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা এখন তাঁর ও সহকর্মী নীতিনির্ধারকদের প্রধান উদ্বেগ। খবর রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই ব্যাপক হারে সুদ কমানোর দাবি তুলছিলেন। তাঁর বক্তব্য, এতে অর্থনীতি চাঙা হবে। তবে ফেডের এ সিদ্ধান্ত তাঁর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। ফেডের পর্ষদে নতুন গভর্নর স্টিফেন মিরান ছিলেন একমাত্র ভিন্নমতাবলম্বী। তিনি ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট হারে সুদহার কমানোর পক্ষে ছিলেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে আরও বড় কাটছাঁটের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সুদের হার নির্ধারণে রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্ন সব সময়ই তোলা হয়। ট্রাম্প সম্প্রতি ফেডের এক গভর্নর লিসা কুককে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন। যদিও কুক আদালতের লড়াইয়ে আপাতত নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন এবং বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান মিরানকে ফেডের পর্ষদে বসান।

শ্রমবাজারে দুর্বলতা

পাওয়েল বলেন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্ব বাড়ছে, তরুণেরা আরও ভঙ্গুর হয়ে পড়ছেন। সামগ্রিকভাবে চাকরি সৃষ্টির গতি খুবই কম। শ্রমবাজারকে আর দুর্বল হতে দেওয়া যাবে না।

পাওয়েল আরও সতর্ক করেন, নতুন চাকরির সংখ্যা এখন বেকারত্বের হার স্থিতিশীল রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে সামান্য ছাঁটাইও বেকারত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে।

মূল্যস্ফীতি বনাম কর্মসংস্থান

মূল্যস্ফীতি এখনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। আশঙ্কা করা হচ্ছে বছরের শেষ নাগাদ মূল্যস্ফীতির হার ৩ শতাংশে উঠবে, যেখানে ফেডের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ শতাংশ। কিন্তু ফেড মনে করছে, কর্মসংস্থানের ঝুঁকি এখন বেশি গুরুত্ব পাওয়ার মতো বিষয়।

ফেডের নতুন পূর্বাভাসে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বাড়িয়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ করা হতে পারে বলা হয়েছে। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশেই স্থির থাকবে বলে তারা অনুমান করছে।

রাজনৈতিক টানাপোড়েন

এ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক নাটকও কম ছিল না। ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা থাকলেও ফেডের পর্ষদের অন্য দুই ট্রাম্প-মনোনীত গভর্নর মিশেল বোম্যান ও ক্রিস্টোফার ওয়ালার শেষ পর্যন্ত মূল সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়েছেন। ওয়ালার বরাবরই শ্রমবাজারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছেন।

পাওয়েল অবশ্য পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ‘আমাদের সংস্কৃতির মূল বিষয় হলো তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত। আজকের বৈঠকে সুদহার ব্যাপক হারে কমানোর বিষয়ে বিপুল সমর্থন ছিল না।’

বাজারের প্রতিক্রিয়া

সুদহার কমানোর ঘোষণার পর ওয়াল স্ট্রিটে প্রথমে শেয়ারের দাম বাড়লেও পরে ওঠানামা করে। শেষমেশ মিশ্র পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন শেষ হয়। ডলার কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে ঠিক, কিন্তু ট্রেজারি বন্ডের সুদ প্রায় অপরিবর্তিত। বাজার এখন প্রায় নিশ্চিত, অক্টোবরের বৈঠকেও সুদ কমানো হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ফেডের সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনের মানে হলো তারা এখন ধীরে ধীরে ‘নিরপক্ষে’ অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি সাময়িকভাবে কিছুটা বাড়লেও ২০২৬ সালের মধ্যে স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নীতিসুদ কী

কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদহারে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে স্বল্প সময়ের জন্য ঋণ দেয়, সেটাই নীতি সুদহার। ইংরেজিতে একে বলে রেপো রেট। রেপোর বাংলা হচ্ছে পুনঃক্রয় চুক্তি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে এটি পরিচিত। অর্থনীতিতে নগদ তারল্যের জোগান দিতে বা অন্যভাবে বলতে গেলে ব্যাংকগুলোর জরুরি প্রয়োজনে অর্থ সরবরাহ করতে মুদ্রানীতির এ হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ হাতিয়ার ব্যবহার করে।

কোভিডের পর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। তখন ফেডারেল রিজার্ভ বাজারে মুদ্রার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে দফায় দফায় নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে। ফলে নীতি সুদহার গত দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশে উঠে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহারের প্রভাব

বিশ্ব অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিসুদের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ফেডের নীতিসুদের হার বাড়লে ট্রেজারি বন্ডের দাম কমে এবং সুদহার কমলে ট্রেজারি বন্ডের দাম বাড়ে। এর কারণ হলো বাজারে নতুন ও অধিক সুদের বন্ড আসার পর পুরোনো বন্ডের কুপন (সুদ) কম মনে হয়, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম কমে যায়। আবার যখন সুদের হার কমে, তখন নতুন বন্ডের কুপন কম হওয়ায় পুরোনো বন্ডের উচ্চ কুপনযুক্ত সুদ বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম বেড়ে যায়।

নীতিসুদ কমলেও একই প্রক্রিয়া ঘটে, তবে বিপরীতভাবে। সুদের হার কমলে নতুন বন্ডের কুপনও কমে যায়। এতে আগের উচ্চ সুদের কুপনযুক্ত বন্ডগুলো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বিনিয়োগকারীরা এই পুরোনো বন্ডগুলো কিনতে আগ্রহী হন, ফলে সেগুলোর দাম বেড়ে যায়। বিনিয়োগকারীরা তখন তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ বাজারেও বিনিয়োগ আগ্রহী হন। এতে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগপ্রবাহ বাড়ে এবং ডলারের চাপ কিছুটা কমে।

সে কারণে বাজার নীতি সুদহারের দিকে তাকিয়ে থাকে, সুদ কমলে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ