রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় মহান শহীদ দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল সংগ্রহ করতে যাওয়া এক স্কুলছাত্রীকে (১১) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছে ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

ধর্ষণের শিকার শিশুটি মির্জাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক দিনমজুরের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। রাত আটটার দিকে শিশুটিকে রংপুরের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষণের আলামত জব্দের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ, ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত রহুল আমিনের পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকেন। আজ সকাল সাড়ে ছয়টায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে স্কুলের শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়ার জন্য ওই ব্যক্তির বাড়িতে ফুল আনতে গিয়েছিল শিশুটি। তখন রুহুল আমিন তাকে জোর করে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে শিশুটি পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে ঘটনাটি জানায়।

ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের এক সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত রুহুল আমিনের পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী। অভিযুক্তের স্বজনেরা বিষয়টি কাউকে না জানাতে তাঁদের হুমকি দেন। তাঁরা শিশুটিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি না করতে চাপ দেন।

মিঠাপুকুরের বৈরাতীহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ অভিযোগে পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন। এরপর শিশুটিকে থানা-পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়। অভিযোগের বিষয়ে রফিকুজ্জামান দাবি করেন, শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষণের আলামত জব্দ করেছেন।

এ ঘটনায় আজ বেলা দুইটার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে বিকেলে রংপুর নগরের কোতোয়ালি থানায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। ওসি দাবি করেন, অভিযুক্ত রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ল আম ন র পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। 

শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।

২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।

এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ